তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় নেপথ্য নায়ক হিসেবে অভিযুক্ত তুর্কি ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার নির্জন প্রাসাদে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি তাকে হস্তান্তরের অপেক্ষায় আছে যুক্তরাষ্ট্র।
তুরস্কের আইনমন্ত্রী আব্দুল্লামিত গুল বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানকে উৎখাত চেষ্টায় অভিযুক্ত নেপথ্য নায়ক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ফেতুল্লাহ গুলেনকে হস্তান্তরের জন্য সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে। এখন আমরা তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। খবর বার্তা সংস্থা আনাদলু'র।
রবিবার রাজধানী ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী বলেন, হস্তান্তরের জন্য কোনো প্রমাণের ঘাটতি নেই। সব প্রক্রিয়াও আমরা সম্পন্ন করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের আইনানুযায়ী সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে।
এর আগে ফেতুল্লাহ গুলেনকে হস্তান্তরের প্রস্তাব করে বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজ ’-এর সিনিয়র ফেলো আব্রাহাম আর ওয়াঙ্গারের ‘ফেতুল্লাহ গুলেনকে তুরস্কে ফিরিয়ে দেয়ার এখনই সময়’ শিরোনামে লেখা নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়।
গত বছর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানকে উৎখাত চেষ্টার নেপথ্যে ফেতুল্লাহ ও তার সমর্থকরা মূল ভূমিকা রাখে বলে অভিযোগ করে দেশটি।
তুরস্কে ফেতুল্লাহর বিশাল সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে, যাদের ‘ফেতুল্লাহ টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন ’ (ফেতো)-এর সদস্য মনে করা হয়।
প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বমিডিয়া ফেতুল্লাহ গুলেনের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।
আব্রাহাম বলেন, গুলেনের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। এতে তার কূটনৈতিক চক্রান্তের সব তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি হাজার হাজার ডলার পেয়েছেন, যা দিয়ে তার বিশাল নেটওয়ার্ক সক্রিয় রেখেছেন। এসব অর্থের করও ফাঁকি দেয়া হয়েছে, যা তদন্তাধীন।
২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে উৎখাতের চেষ্টা করে ফেতুল্লাহর সমর্থকরা। ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে ২৫০ সামরিক-বেসামরিক লোক নিহত হন। আহত হন প্রায় ২২০০ জন।
তুরস্কের অভিযোগ, অভ্যুত্থান চেষ্টার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন ফেতুল্লাহ গুলেন ও তার প্রতিষ্ঠিত ফেতো নেটওয়ার্ক। ওই ঘটনার পর তুরস্কের একটি আদালত গুলেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
বিডি প্রতিদিন/২৩ অক্টোবর ২০১৭/এনায়েত করিম