মিয়ানমারে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় যখন বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড়, সেখানে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি নীরব থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ওই সাংবাদিকদের স্ত্রীরা। একই সঙ্গে তারা নিজেদের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সু চিকে দায়ী করেন।
একসময় মানবাধিকারের আইকন হিসেবে বিবেচিত সু চি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণের পর সম্পূর্ণ বিপরীত চেহারায় আবির্ভূত হয়েছেন অভিযোগ করে প্রতিবেদক ওয়া লোনের স্ত্রী প্যান ই মোন বলেন, যখন আমি ইংরেজি বুঝতাম না, তখন অং সান সু চি বক্তব্য দিতেন। আমি সবসময় তাদের বক্তব্য শুনতাম। কারণ আমি জানতাম, দেশের নেত্রী কথা বলছেন।
ইয়াঙ্গুনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি তাকে ভালোবাসতাম। তাকে খুবই সম্মান করতাম। কিন্তু তিনি বলেছেন, আমার স্বামী প্রতিবেদক না। কারণ তারা দেশের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন। তার জবাবে আমি বিপর্যস্ত বোধ করছি।
জাপানিজ সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে-কে গত জুনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সু চি বলেছেন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয় লঙ্ঘনের দায়ে দুই প্রতিবেদককে আটক করা হয়েছে।
প্যান ই মোন বলেন, আমাদের দেশের নেত্রী মামলাটি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত নন। আমাদের দুই পরিবারই তাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যাকে এত শ্রদ্ধা করতাম, তিনি যখন আমাদের ভুলভাবে তুলে ধরেন, তখন আমরা খুবই অনুশোচনা বোধ করি।
রাখাইনের সেনা অভিযানের সময় ইনদিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করে লাশ পুঁতে ফেলার একটি ঘটনা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ও (২৮)।
বরাবরই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসা এ দুই সাংবাদিক মামলার বিচারের সময় আদালতকে বলেছিলেন, গত ১২ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গুনের এক রেস্তোরাঁয় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে দুই পুলিশ সদস্য তাদের হাতে কিছু মোড়ানো কাগজ ধরিয়ে দেন এবং তার পর পরই সেখান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
দুই সাংবাদিকের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ওয়া লোন ও কিয়াও সো নির্দোষ, তাদের মুক্তি দিয়ে স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ দেয়া হোক।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম