নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে সমতা আনতে ছোট দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় অনুদান দেয় জার্মান সরকার। ছোট দলগুলো, এমনকি যাদের সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই, তারাও এই অনুদান পেতে পারে। নির্বাচনে যাতে শুধু বড় দলগুলোই এগিয়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই অনুদান দেয় দেশটির সরকার।
তবে সেই দলকে আগের নির্বাচনে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট পেতে হবে। সেই ভোটের হিসেবে দলটিকে অনুদান দেয়া হয়, যা দলটির নিজস্ব আয়ের চেয়ে বেশি হতে পারবে না। নির্বাচনি প্রচারণার জন্য অনেক টাকার দরকার হয়। পোস্টার, টিভি বিজ্ঞাপন আর মিটিং-মিছিল আয়োজনের খরচ জোগাড় করা বড় দলগুলোর জন্য সহজ। কিন্তু ছোট দলগুলো যাতে পিছিয়ে না থাকে, সেজন্য সহায়তা করে জার্মানি।
ছোট দলগুলোকে সহায়তার এই উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও তবে সেখানে সম্প্রতি দাবি উঠেছে, বড় দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অর্থের উৎস সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার।
জার্মানিতে দলগুলো কিভাবে তাদের নির্বাচনের অর্থ সংগ্রহ করে? এ নিয়ে লিখেছে ডয়েচে ভেলে। সেখানে জানানো হয়, জার্মানির বড় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য নানাভাবে অর্থ পেয়ে থাকে। বিভিন্ন দলের সদস্যরা দল থেকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও আলাদাভাবে দান গ্রহণের সুযোগ আছে।
জার্মান আইন অনুযায়ী, একটি দলকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ৫০ হাজার ইউরোর বেশি অর্থ দান করলে সেটা ঘোষণা করতে হয়। অর্থাৎ, দলটি কার কাছ থেকে একবারে এই টাকা পেয়েছে, সেটা জনগণ যাতে জানতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু পঞ্চাশ হাজার ইউরো বা তার নীচে যদি দান করা হয়, তাহলে সেটা আলাদাভাবে জানাতে হয় না।
নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে জার্মানির অনেক প্রতিষ্ঠান তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে একবারে টাকা না দিয়ে সারা বছর জুড়ে টাকা দেয়। একটি দল এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে ক্ষমতায় যাওয়ার পর যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহায়তা নিয়েছে, তাদের জন্য কাজ করার একটা দায়বদ্ধতা তৈরি হয়।
সাধারণ ভোটারদের সেটা না জানিয়ে করা হলে তা এক ধরনের প্রতারণার মধ্যেই পড়ে। ফলে, জার্মানির এই আইন পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায়, গত বছর জাতীয় নির্বাচনের সময় সবচেয়ে বেশি অনুদান পেয়েছিল চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ ও এফডিপি। তাদের তুলনায় গ্রীন পার্টি ও শ্রমিকবান্ধব এসপিডি'র অনুদানের পরিমান অনেক কম ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন