ব্রিটেনস্থ ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার প্রায় ৭ বছর পর উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ। এদিকে অ্যাসাঞ্জকে যেন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতেই অ্যাসাঞ্জকে যেন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া না হয়, সে দাবিতে আওয়াজ তুলেছেন লেবার পার্টির নেতারা।
টুইটারের এক পোস্টে জেরেমি করবিন বলেছেন, ইরাক ও আফগানিস্তানে আমেরিকা যে নৈরাজ্য চালিয়েছে, তার প্রমাণ ফাঁস করার দায়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণ চাওয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারের উচিত এর বিরোধিতা করা।
বৃহস্পতিবার লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত সাত বছর ধরে ইকুয়েডরে রাজনৈতিক পুনর্বাসনে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে বেনামে ওয়েবসাইট চালানোর অভিযোগ তুলেছে মোরেনো সরকার।
অভিযোগ উঠে, মোরেনোর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করা হয় ওই বেনামী ওয়েবসাইটে। সেখানে ‘আইএনএ পেপার্স’ নামে একটি নথি প্রকাশিত হয়। যেখানে জানানো হয় যে, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে মোরেনোর ভাই ও পরিবার ইউরোপে বিলাসবহুল জীবনযাপন কাটিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সেই নথিতে মোরেনো ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত ছবিও ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এতে অ্যাসাঞ্জের ওপর ক্ষেপে যান মোরেনো। তিনি তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ও ছবি হ্যাক করার অধিকার কে দিয়েছে প্রশ্ন ছুড়েন অ্যাসাঞ্জকে।
মোরেনোর এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে উইকিলিকস। তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি। এতে অ্যাসাঞ্জকে দেয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নেয় ইকুয়েডর সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোরেনোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের সন্দেহে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইকুয়েডর সরকার।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক এবং কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।
২০০৬ সালে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে অ্যাসাঞ্জ ওয়েবসাইট উইকিলিকস চালু করেন। ২০১০ সালে উইকিলিকস বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়।
সুইডেনে তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জামিনে থাকার সময় ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসটিতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন