ভালবেসেও ঝগড়া করেন না স্বামী। সবসময় প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চান স্ত্রীকে। কিন্তু, নিরুত্তাপ এই জীবন ক্রমশই যেন অসহনীয় উঠেছিল ঐ নারীর কাছে। বাধ্য হয়ে তাই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন জানালেন তিনি। অভূতপূর্ব এই ঘটনাটি ঘটেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ফুজাইরা এলাকার শরিয়া আদালতে। নারীর আবেদন শুনে অবাক হয়েছেন বিচারকও।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে ঐ নারী জানিয়েছেন, একবছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের। বিয়ের পর থেকে তার প্রতি স্বামীর ভালবাসা দেখে আপ্লুত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। রান্না করা থেকে ঘর পরিষ্কার, বাজার করা থেকে সংসারের যাবতীয় কাজ কোনও কিছুই স্ত্রীকে করতে দিতেন না ওই ব্যক্তি। প্রথম বিষয়টি ভাল লাগলেও আস্তে আস্তে বিষয়টি বিরক্তিকর হয় ওঠে ওই নারীর কাছে। কেমন যেন দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছিল চারপাশে। পরিস্থিতি এমন জায়গা গিয়েছিল যে ঝগড়া করার জন্য স্বামীকে রাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেও কোনও লাভ হয়নি। বরং স্ত্রীর প্রতি আরও ভালবাসা বেড়েছে স্বামীর। এই আচরণে বিরক্ত হয়েই শেষপর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ঐ নারী বলেন, বিয়ের পর থেকে একটা দিনও আমাদের ঝগড়া হয়নি। তাই আমি সবসময় প্রার্থনা করতাম যেন একদিনের জন্য হলেও অশান্তি হয়। ও আমাকে বকাবকি করে। কিন্তু, কোনওদিনই সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। ফলে নিরুত্তাপ অবস্থাতেই কেটে যাচ্ছিল আমার জীবন। কেমন যেন দমবন্ধ করা পরিবেশের মধ্যে কাটছিল দিনগুলো। বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হই। বিচ্ছেদের আবেদন জমা দিই।
ভালবেসেও স্ত্রীর এই আচরণে অবাক হয়েছেন স্বামী। তার কথায়, আমি তো কিছু খারাপ করিনি। একজন আদর্শ ও ভদ্র স্বামী হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। একবার আমার স্ত্রী শরীরের ওজন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। তাই ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খেয়ে ও ব্যায়াম করে শরীরের মেদ কমিয়ে ছিলাম। তাছাড়া আমার মনে হয় বিয়ের প্রথম বছরেই সম্পর্ক গভীরতা ঠিক বোঝা যায় না। আরও কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটি মানুষই তাদের ভুল থেকে শেখে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আরও কিছুদিন ঐ দম্পতি একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া ভুল বোঝাবুঝি মেটানোর দিকে নজর দিতে বলেছেন বিচারক। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
