১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৬:২৯

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন বদলে দেবে ফুটবলকে

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন বদলে দেবে ফুটবলকে

ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই উত্তাল যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আহ্বানে বৃহস্পতিবার আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশটিতে। 

সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি। ফলে স্বল্প মেয়াদ থেকে দীর্ঘ মেয়াদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত হয়েছে বরিস জনসনের। কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনে জয় দেশটির ফুটবলের ভবিষ্যৎ দুশ্চিন্তার মুখে ফেলে দিয়েছে।

এদিকে, আগামী ৩১ জানুয়ারি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে সরে আসার কথা যুক্তরাজ্যের। এর সপক্ষ শক্তি নিজেকে নিজেকে পরিচিত করেছেন বরিস। ফলে বহু আলোচিত ব্রেক্সিট এই জানুয়ারিতেই হয়ে যাওয়ার কথা। আর সেটা হলেই এর প্রভাব পড়বে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগসহ দেশটির সর্বস্তরের ফুটবল।

একবার ব্রেক্সিট হয়ে গেলেই ইউরোপের অন্য দেশের ফুটবলাররা চাইলেই আর যুক্তরাজ্যে খেলতে আসতে পারবেন না। যারা এরই মাঝে এখানে চলে এসেছেন তাদের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু নতুন করে কোনো ফুটবলার খেলতে চাইলে তাঁকে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করে আসতে হবে। অস্ট্রেলিয়া বহুদিন ধরেই পয়েন্ট ভিত্তিক অভিবাসী গ্রহণের পদ্ধতি অনুসরণ করছে। যুক্তরাজ্যেও এই পয়েন্ট ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু হবে। ফলে ইউরোপের কোনো ফুটবলার ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড বা ওয়েলশের ক্লাবে খেলতে চাইলে তাকে বেশ কঠিন কিছু ধাপ পার হয়েই আসতে হবে।

এত দিন অ-ইউরোপীয় ফুটবলারদের দলে টানতে বেশ কিছু ঝামেলা পোহাতে হতো ইংলিশ ক্লাবগুলোকে। হয় শীর্ষ দেশগুলোর ফুটবলার হতে হতো, না হলে জাতীয় দলের হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ম্যাচ খেলতে হতো। এসব নিয়মের বেড়াজালে পড়ে প্রতিশ্রুতিশীল হয়েও ব্রাজিলের ডগলাস লুইজের কখনো ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলা হয়নি। ২০১৭ সাল থেকে এ দলের সঙ্গে যুক্ত থেকেও ইংল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া হয়নি তাঁর। এ মৌসুমে দলবদল করে অ্যাস্টন ভিলায় গিয়ে তবে মুক্তি মিলেছে এই ব্রাজিলিয়ানের।

ব্রেক্সিট হলে ইউরোপের ফুটবলারদের ক্ষেত্রেও এ নিয়মগুলো কার্যকর হবে। অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড়দের জন্য প্রযোজ্য কঠিন নিয়ম (ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশে থাকা দলের খেলোয়াড় এবং জাতীয় দলের সর্বশেষ ৩০ ভাগ ম্যাচেই খেলেছেন এমন খেলোয়াড়কেই আনা যাবে শুধু) যদি ইউরোপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়, তবে ইংলিশ লিগের ৬৫ ভাগ খেলোয়াড়কেই ইংল্যান্ড ছাড়তে হবে। প্রিমিয়ার লিগ এর মাঝেই এ নিয়ম বদলানোর অনুরোধ জানিয়ে রেখেছে। যদিও ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন এর পক্ষে।

ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশনের ধারণা বিদেশি খেলোয়াড় কমলে ইংলিশ খেলোয়াড়দের আরও বেশি সুযোগ মিলবে এবং সে ক্ষেত্রে দেশটির ফুটবল ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে। কিন্তু ব্রেক্সিট হলে ইউরোপের প্রতিভাবান কিশোরদের নিয়ে আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে ইংলিশ ক্লাবগুলোর। ফলে ১৬ এর বেশি কিন্তু ১৮ এর কম এমন ফুটবলারদের এনে আর একাডেমি সমৃদ্ধ করার পথ থাকবে না। সেস্ক ফ্যাব্রিগাস, এরিক গার্সিয়া বা ব্রাহিম ডিয়াজদের মতো প্রতিভাবানদের আর টানতে পারবে না ইংলিশ ক্লাব। আবার জাডন সাঞ্চোর মতো যেসব ইংলিশ কিশোর শীর্ষ পর্যায়ে খেলার জন্য ইউরোপের অন্যান্য লিগে যেতে পারছেন সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে।

ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে ৬৫০ আসনের মধ্যে ৬০০ আসনের ফলাফলে কনজারভেটিভ দল পেয়েছে ৩৩০টি আসন এবং লেবার পার্টি পেয়েছে ১৯৬ আসন। নির্বাচনে জয়ী হতে প্রয়োজন ছিল ৩২৬টি আসন। 

 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর