দিনের বেলাতেও তাপমাত্রা দশের আশপাশে। কনকনে এই ঠান্ডার মধ্যেই প্রতিবাদের আগুনে বৃহস্পতিবার জ্বলে উঠে ভারতের রাজধানী দিল্লি। পুলিশি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পথে নেমে আসলেন হাজার হাজার জনতা। মুখে স্লোগান, হাতে তেরঙা --- দাবি নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নজিরবিহীনভাবে ১৮টি মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সেবাও। বিকাল গড়িয়ে রাত হওয়ার পরও যন্তর মন্তর থেকে সরেননি আন্দোলনকারীরা। রাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে এলাকা ঘিরে ফেলে। বিক্ষোভকারীদের চলে যেতে বলা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এলাকা ছাড়েননি বিক্ষোভকারীরা।
দিল্লি পুলিশ আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিল, লালকেল্লা চত্বরে কোনও মিটিং-মিছিল তারা করতে দেবে না। কিন্তু, বেলা বাড়তেই পরিষ্কার হয়ে যায়, সেই নির্দেশ কেউ মানছেন না কেউ। দলে দলে প্রতিবাদী জনতা এসে ভিড় করতে শুরু করে। সেই ভিড়ে যেমন ছিলেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, তেমনই ছিলেন প্রবীণরাও। প্রথম দিকে বাস-গাড়িতে করে বিক্ষোভকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। একটা সময়ের পর গাড়ি কম পড়ে যায়। দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বাম নেতারা। ওঠে সরকার বিরোধী স্লোগান।
মান্ডি হাউস এলাকার আশপাশে চলতে থাকা এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ, রাজনীতিবিদ যোগেন্দ্র যাদব এবং কয়েকজন বাম নেতাকে তুলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ।
লালকেল্লা, শহিদি পার্ক, আইটিও, কেন্দ্রীয় সচিবালয়, মুনিরকা --- জমায়েত হয় সর্বত্র।
বিক্ষোভ দেখানোর সময় আটক করা হয় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, হান্নান মোল্লা, বৃন্দা কারাটদের। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এরপরও বিক্ষোভ চলতে থাকে পুরোদমে, যার নেতৃত্বে থাকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র সংগঠন।
শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে শুরু করলে তারা যন্তরমন্তরে এসে জমা হতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পরে সেখানে আসেন সীতারাম ইয়েচুরি। সেখানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন অসাংবিধানিক এবং জনস্বার্থ বিরোধী। আমাদের প্রতিবাদ চলবে।’ সূত্র: এই সময়
বিডি প্রতিদিন/কালাম