চীনের শাসন থেকে হংকং–এর স্বাধীনতা চাওয়া নিয়ে সামান্য একটি কথা এমনকি কোনও ইঙ্গিত দিলেও নতুন নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হতে হবে। কোনও ভিন্ন মত সহ্য করা হবে না এই কথা বেইজিং–এর পক্ষ থেকে হংকংকে জানিয়ে দেওয়ার পরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে পৃথিবীর অন্যতম উজ্জ্বল বাণিজ্যিক এলাকা। হাতে ঢাল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় নেমে পড়েছে। প্রতিবাদীরা প্রথমে সংখ্যায় কম থাকলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পথে নেমে আসছে হাজার হাজার মানুষ।
হংকং–এর জন্য রচিত নতুন নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারও শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রেফতার হওয়া প্রতিবাদীদের মধ্যে রয়েছে একটি বছর পনেরোর কিশোরী, যার অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে, সে একটি হংকং–এর স্বাধীনতা লেখা পতাকা নাড়াচ্ছিল। প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ও গোলমরিচের স্প্রে ব্যবহার করছে। বেইজিং মঙ্গলবারই নতুন নিরাপত্তা আইনের কথা ঘোষণা করে।
অতীতের ব্রিটিশ কলোনি ২৩ বছর আগে চীন অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের সময়ে বেইজিং–এর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে চীন হংকং–এর নাগরিকদের স্বাধীনতাকে সম্মান করবে। কিন্তু অধিগ্রহণের ২৩তম বার্ষিকী উদযাপনের ঠিক আগের দিন নতুন নিরাপত্তা আইনের ঘোষণায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে অতীতের ব্রিটিশ কলোনি। প্রথম দিকে রাস্তায় নেমে আসা প্রতিবাদীদের সংখ্যা পুলিশের তুলনায় অনেকটাই কম থাকলেও পরে কয়েক হাজার মানুষ কাঁদানে গ্যাসকে উপেক্ষা করে পথে নেমে পড়ে।পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১০ জনকে নতুন নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম যাকে গ্রেফতার করা হয় তার হাতে হংকং–এর স্বাধীনতা লেখা একটি পতাকা ছিল। এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় ব্রিটেনের প্রতীক হাতে ধরে ছিল বলে। অন্যদের গ্রেফতারের কারণ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা প্রত্যেকেই স্বাধীনতার ইঙ্গিতবাহী কিছু না কিছু বহন করছিলেন। এছাড়া বেআইনি জমায়েত, অস্ত্র বহন ইত্যাদি বিভিন্ন ধারায় আরও ৩৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নতুন নিরাপত্তা আইনে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, স্বাধীনতার স্বপক্ষে কোনও পতাকা বহন করলে বা স্লোগান দিলে প্রতিবাদ সম্পূর্ণ অহিংস হলেও তাকে গ্রেফতার করা হবে। এমনকি প্রতিবাদীদের নিয়ে কোনও বাস চলাচল করাও বেআইনি বলে ঘোষিত হয়েছে নতুন আইনে। প্রতিবাদে যদি সামান্যতম হিংসার ছোঁয়া থাকে যেমন, গণপরিবহণ ভাঙচুর ইত্যাদি, তাহলে প্রতিবাদীকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে চীনে পাঠানো হবে এবং আজীবন জেলে বন্দি থাকতে হবে। সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক