সম্প্রতি সৌদি আরবের আব্হা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেশ কয়েকবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সেনারা। সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত আব্হা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বার বার এসব হামলা হুথিদের নেতৃত্বাধীন জনপ্রিয় আনসারুল্লাহ আন্দোলন ও এর মিত্রদের শক্তিমত্তা এবং শত্রুদের প্রতি কঠোর বার্তাই তুলে ধরছে।
বিগত মাসগুলোতে ইয়েমেনের সশস্ত্র ও গণ-বাহিনী সৌদি আরবের আসির প্রদেশ-সংলগ্ন মারিব প্রদেশে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে এবং এ প্রদেশের মূল শহর মারিবের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।অবশ্য সৌদি জোটও ইয়েমেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত কয়েক সপ্তায় সৌদি জোটের হামলায় নিহত হয়েছে ইয়েমেনের নিরপরাধ বহু বেসামরিক নাগরিক যাদের অনেকেই ছিল শিশু ও নারী।
ইয়েমেনিদের পাল্টা হামলাগুলো নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত এইসব হামলায় তারা নিজস্ব প্রযুক্তির সামাদ-তিন নামের ড্রোন ব্যবহার করেছে। বিশ্বে সামরিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরেই রিয়াদ সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করছে। অথচ ইয়েমেনিদের ড্রোন হামলাই ঠেকাতে পারছে না রিয়াদ।
দ্বিতীয়ত সৌদি আরবের আসির প্রদেশে রয়েছে দেশটির বিমান ও স্থল সেনাদের এক বিরাট অংশ। এই প্রদেশ ৮০ বছর আগে ছিল ইয়েমেনেরই অংশ। এখানে খনিজ তেলের অনেক স্থাপনাও রয়েছে। তাই এ অঞ্চলে বার বার ইয়েমেনিদের হামলার অর্থ প্রদেশটিকে হাতছাড়া করার হুমকির মুখে রয়েছে রিয়াদ।
তৃতীয়ত আমিরাত-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রেক্ষাপটে আমিরাতের পাশাপাশি সৌদি সরকারও দেশটির আকাশ-সীমা ইসরায়েলের জন্য খুলে দিয়েছে। কিন্তু এ প্রদেশে ইয়েমেনি ড্রোন হামলা ঠেকাতে সৌদি ব্যর্থতা থেকে বোঝা যায় এখানে আমিরাতি ও ইসরায়েলি বিমানের নিরাপত্তা এবং সৌদি-আমিরাতি-ইসরায়েলি স্বার্থ ভবিষ্যতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে পারে।
চতুর্থত ইয়েমেনিদের এসব হামলা দেশটির সোকত্রা দ্বীপে ও কৌশগলগত গুরুত্বপূর্ণ বাবআলমানদেব প্রণালীতে আমিরাত ও ইসরায়েলি সহযোগিতার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও এক বড় হুঁশিয়ারি। কারণ এ অঞ্চলে ইসরায়েলিদের আনাগোনাকে ইয়েমেন তার নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মনে করে। মোটকথা আবহা বিমানবন্দরে ইয়েমেনের হামলা সৌদি আরব, আমিরাত ও ইসরায়েলের জন্য বড় ধরনের কঠোর বার্তা।
সূত্র : পার্সটুডে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক