ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের পর যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন (ইউএস ক্যাপিটল) অবরুদ্ধ করে দেশটির পুলিশ। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছিল সেখানে। বিক্ষোভের নামে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনায় জো বাইডেন বলেছেন, এই বিক্ষোভ একটি বিদ্রোহের সমতুল্য এবং এখনই যার অবসান হওয়া উচিত। আমাদের গণতন্ত্র এক নজিরবিহীন আক্রমণের মুখে।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের পর যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে (ইউএস ক্যাপিটল) ফের অধিবেশন শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলার সময় হামলার পর ভবন থেকে আইন প্রণেতাদের সরিয়ে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে কারণে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয় অনুমোদন স্থগিত হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ফের অধিবেশন শুরু হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, অধিবেশন চলাকালে হঠাৎ করেই ট্রাম্প সমর্থকরা সেখানে তাণ্ডব শুরু করে। ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে গোলাগুলিও হয়েছে। ওয়াশিংটনে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বুধবার কংগ্রেস অধিবেশনের বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক, যাদের মধ্যে উগ্রপন্থী বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরাও রয়েছেন। সেই সমাবেশে বক্তব্যে নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
পার্লামেন্ট ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের ঘটনায় জো বাইডেন আরও বলেছেন, তাদের তৎপরতা আসলে রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। পার্লামেন্ট ভবনে তাণ্ডব, জানালা ভাঙচুর, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে হামলা, প্রতিনিধি পরিষদে যথাযথভাবে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার হুমকি- এগুলো আসলে প্রতিবাদ নয়, এটা একটা বিদ্রোহ।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উস্কানিতেই মার্কিন পার্লামেন্ট ভবনে (ইউএস ক্যাপিটল) তার সমর্থকরা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি এই ঘটনাকে মার্কিন জাতির জন্য চরম অসম্মান ও লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেন।
বারাক ওবামা বলেন, এই সহিংসতা বর্তমান প্রেসিডেন্টের উস্কানির ফল। তিনি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ভিত্তিহীনভাবে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। সমর্থকদের বুঝানোর চেষ্টা করছেন যে তিনি বাইডেনের কাছে নির্বাচনে হেরে গেছেন কেবল ডেমোক্র্যাটদের জালিয়াতির কারণে। কিন্তু তার এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনে সহিংস বিক্ষোভের ডামাঢোলের মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন স্টেফানি গ্রিজম্যান। তিনি হোয়াইট হাউজের সাবেক যোগাযোগ পরিচালক, প্রেস সচিব এবং মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের বর্তমান চিফ অব স্টাফ।
সিএনএন জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার স্টেফানি গ্রিজম্যান পদত্যাগপত্র জমা দেন। যা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনে যেসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন স্টেফানি গ্রিজম্যান। ২০১৫ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। এরপর উপ প্রেস সচিব হিসেবে হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেন। ২০১৭ সালে তিনি মেলানিয়ার ইস্ট উইং স্টাফের দায়িত্ব নেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার