এনভায়রনমেন্টাল পলিউশন (Environmental Pollution) এ সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর সম্মিলিত প্রবাহের সঙ্গে প্রতিদিন বঙ্গোপসাগরে ৩ বিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা প্রবেশ করে থাকতে পারে। এটি নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রতিপত্তি, বৈশিষ্ট্য এবং মৌসুমী বৈচিত্র্যের বিষয়ে প্রথম গবেষণা।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির সি টু সোর্স: গঙ্গা অভিযানের অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দলের সংগৃহীত নমুনা ব্যবহার করে গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
বিশেষ ফিল্টার দিয়ে নদীর পানি পাম্প করে সকল কণা সংগ্রহের মাধ্যমে ২০১৯ সালে দুটি অভিযানে ১২০টি নমুনা (প্রাক ও বর্ষাপরবর্তী সময়ে ৬০টি করে) ১০টি স্থানে একত্রিত করা হয় । এরপর প্রাক-বর্ষায় গৃহীত ৪৩টি (৭১.৬%) এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে পাওয়া ৩৭টি (৬১.৬%) মাইক্রোপ্লাস্টিক নমুনা বিশ্লেষণ করা হয় ইংল্যান্ডের প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে। গৃহীত মাইক্রোপ্লাস্টিকের ভেতর সবচেয়ে বেশি ছিল ফাইবার (৯০%), যার ভেতর ছিল রেয়ন (৫৪%) ও এক্রাইলিক (২৪%)। এ দুটোই সাধারণত পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদী অববাহিকা থেকে প্রতিদিন ১ বিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হতে পারে। পরিবেশ দূষণ নিয়ে প্রকাশিত এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব প্লাইমাউথের ইন্টারন্যাশনাল মেরিন লিটার রিসার্চ ইউনিটের গবেষকরা। এতে আরও অংশ নেন ভারতের বন্যপ্রাণী ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াইল্ড টিম, ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ও লন্ডনের জুওলজিকাল সোসাইটি। রিসার্চ ফেলো এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফির অভিযাত্রি ড. ইমোজেন নাপার এই গবেষণার প্রধান লেখক; তিনি সি টু সোর্স: গঙ্গা অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যেও ছিলেন।
গঙ্গা নদী হিমালয় হয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, গঙ্গা ভারত মহাসাগরে পৌঁছানোর কিছুটা আগে যোগ দেয় ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীতে। বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশে এই নদী পদ্মা নাম ধারণ করেছে।
তিনটি নদীর সম্মিলিত প্রবাহ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অববাহিকা, যেখানে সাড়ে ৬৫ কোটিরও বেশি বাসিন্দা নির্ভর করে এর পানির ওপর।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা