১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১২:২২

সৌরজগতের নতুন তত্ত্বের সন্ধানে নাসার লুসি অভিযান

বৃহস্পতির গ্রহাণু নিয়ে এত গবেষণা কেন?

অনলাইন ডেস্ক

সৌরজগতের নতুন তত্ত্বের সন্ধানে নাসার লুসি অভিযান

সৌরজগতের নতুন তত্ত্বের সন্ধানে নাসার লুসি অভিযান

এক যুগ ধরে চেষ্টার সুফল। অবশেষে গুরুগ্রহ অর্থাৎ বৃহস্পতিকে ঘিরে থাকা গ্রহাণুতে পৌঁছে গেল নাসার পাঠানো যান ‘লুসি’। শনিবার আমেরিকার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে পাঠানো হয়েছে লুসিকে। বৃহস্পতির ট্রোজান গ্রহাণু থেকে পাথরসহ একাধিক কঠিন পদার্থ সংগ্রহ করে আনার কথা তার, যা বিশ্লেষণ করে সৌরজগতের সৃষ্টি সম্পর্কে নতুন কোনো তত্ত্বের আভাস পেতে পারেন বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

শনিবার ঘড়িতে স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৩৪। কেপ ক্যানাভেরাল থেকে অ্যাটলাস ফাইভ বৃহস্পতির গ্রহাণু ট্রোজানের উদ্দেশে রওনা দেয়। ‘লুসি’র অন্তর্গত এই রকেটটি পুরোপুরি সৌরশক্তিতে চলে। গত ১২ বছর ধরে ‘লুসি’ বিভিন্ন গ্রহাণু পর্যবেক্ষণের কাজ করে চলেছে। তারই মাঝে সে বৃহস্পতির ট্রোজানকে ছুঁতে সক্ষম হয়েছে। লুসিই প্রথম মহাকাশযান, যে মহাকর্ষজ টান কাটিয়ে বিভিন্ন গ্রহাণুতে ঘুরছে। 

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আমাদের সৌরজগত সম্পর্কে অনেক নতুন নতুন তথ্য দিতে সক্ষম অবিরাম মহাশূন্যে ঘুরে বেড়ানো ‘লুসি’। নাসার সায়েন্স মিশনের সহকারী পরিচালক থমাস জারবুকেনের কথায়, ‌‘প্রতিটি গ্রহাণু থেকে সংগৃহীত একেকটি নমুনাই আমাদের আলাদা আলাদা তত্ত্বের হদিশ দেবে বলে ধারণা, যা থেকে সামগ্রিকভাবে নতুন কোনো তত্ত্বের ধারণা পাওয়া যাবে।’

বৃহস্পতির গ্রহাণু ট্রোজানে কীভাবে কাজ করবে ‘লুসি’? তার ছকও বেঁধে দিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ২০২৫ সাল নাগাদ মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝ বরাবর ট্রোজানের অংশে প্রথমবার নমুনা সংগ্রহের জন্য ঝাঁপাবে। এরপর ২০২৭ সাল থেকে ২০৩৩ সাল – এই ৫ বছরে ট্রোজান থেকে নমুনা সংগ্রহে সাতবার চেষ্টা করবে এই যানটি। তার মধ্যে ট্রোজানের শেষাংশ অর্থাৎ ল্যাজ বা গ্যাসীয় অংশের গঠন নিয়ে কাজ করবে। সেখান থেকে তাদের ভর, ঘনত্ব, রাসায়নিক গঠন নিয়েও জানা যেতে পারে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, ট্রোজান থেকে নমুনা সংগ্রহে এত কেন গুরুত্ব দিচ্ছে নাসা? আসলে বৃহস্পতির আশপাশে ঘুরে ট্রোজান জমা করছে প্রায় ৭ হাজার মহাজাগতিক উপাদান, যা থেকে ইউরেনাস, নেপচুনের মতো গ্রহের আবহাওয়া তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করা যে ৯টি গ্রহ রয়েছে, তাদের গঠনের নেপথ্যেও ট্রোজানের কোনো বা কোনো সম্পর্ক আছে বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের। আর এ কারণেই বৃহস্পতির গ্রহাণু নিয়ে এত গবেষণা।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর