ডলারের তুলনায় তুরস্কের মুদ্রা লিরার দাম আরো পড়ে গেল। ফলে জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে বাড়ছে।
মঙ্গলবার লিরার দাম আরো চার শতাংশ কমেছে। এখন এক মার্কিন ডলার মানে ১০ দশমিক ৩৬ লিরা।
সাম্প্রতিক সময়ে লিরার দাম কখনো এতটা কমেনি। ফলে তুরস্ক আর্থিক সংকটের মুখে। কারেন্সি মার্কেট বা মুদ্রা বাজারে লিরার অবস্থা এখন সব চেয়ে খারাপ।
গত বছর অক্টোবর মাসের তুলনায় তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ২০ শতাংশ। যদিও নিরপেক্ষ মুদ্রাস্ফীতি রিসার্চ গ্রুপের মতে, আগের তুলনায় মুদ্রস্ফীতি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
কাদ্রিয়ে ডোগরুর বয়স ৫৯ বছর। ইস্তানবুলের বাজারে তার দুইটি দোকান আছে। তিনি জানিয়েছেন, ''আগে কখনো এই ধরনের অবস্থার মুখে পড়িনি। রাতে শুতে গেলাম। সকালে উঠে দেখলাম জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমি ৪০ লিরা দিয়ে পাঁচ লিটার তেল কিনে বাড়ি এলাম। আবার বাজারে গেলাম। দেখলাম সেটার দাম হয়ে গেছে ৮০ লিরা।''
তুরস্কের অর্থনীতির এই অবস্থার একটি কারণ হলো করোনা। গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনা প্রতিটি দেশের অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। তার উপর রয়েছে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট মনে করেন, ঋণের ক্ষেত্রে সুদের পরিমাণ কম রাখলেই অর্থনীতি ফুলেফেঁপে উঠবে। তার ধারণা, মুদ্রার দাম কম হওয়া মানে আর্থিক বৃদ্ধি সুনিশ্চিত হওয়া। অর্থনীতিবিদরা এরদোগানের এই মত ও পথ মানেন না। তাদের মতে, এরদোগানের নীতির ফলেই তুরস্কের এই অবস্থা।
মুদ্রাস্ফীতির ফলে জিনিসের দাম বাড়ছে। মুদ্রার মূল্য কমে যাওয়ায় আমদানি করতে অনেক বেশি অর্থ লাগছে। জ্বালানি তেল থেকে সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তাই হু হু করে বাড়ছে। তুরস্কের শিল্পও কাঁচামালের জন্য বিদেশের উপরই নির্ভর করে। তাই তাদেরও বেশি অর্থ খরচ করে তা আমদানি করতে হচ্ছে।
এরদোগান অবশ্য দাবি করে যাচ্ছেন, অর্থনীতি এখনো রীতিমতো শক্তিশালী। করোনা-সংকট পুরোপুরি কেটে গেলেই আবার তুরস্কের অর্থনীতি ফুলেফেঁপে উঠবে।
তার দাবি, ''ইউরোপের হাত খালি। আমেরিকারও একই অবস্থা। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের যথেষ্ট সম্পদ আছে।''
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন