যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ, তবে পূর্ণ বয়স্ক একজন মানুষের মনে যুদ্ধ যে ছাপ ফেলে তার চেয়ে শতগুণ ভয়ঙ্কর ছাপ ফেলে শিশু মনে।
৮ বছরের মেয়ে শিশু ওলেনার গলায় ঝোলানো একটি কুকুরের মুখায়ব দিয়ে ডিজাইন করা ব্যাগ! স্যুপ নেয়ার জন্য যখন লাইনে দাঁড়িয়েছিল। শিশুসুলভভাবেই প্রশ্ন করলো, ‘কবে ফিরবো নিজের বাড়িতে!’ আহারে! শিশু বয়সে দেশ ও বাস্তুহারা মেয়ে ওলেনা দোভাষীর সহায়তায় এই প্রতিবেদককে যখন প্রশ্ন করে তখন নির্বাক হওয়া ছাড়া আর কি করার থাকে! এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই! এই শিশুর কাছে বাড়ির চৌহদ্দি মানেই দেশ!
ওলেনার মতো লক্ষ শিশু এই শরণার্থী শিবিরে ঠাণ্ডা আর বরফের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে! এই শিশুমন বোঝে না অস্ত্রের রাজনীতি, বোঝে না অর্থনীতি, তেলের দাম বাড়লে না কমলো; সেইসব নিয়ে নেই মাথাব্যথা! তার কাছে জীবন মানেই নিজের জন্ম ভিটা! নিজের আঙিনা! তার কাছে হিসেব নিকাশ শুধু ফেলে আসা পুতুলের সংসার!
ওলেনার মতো হাজারো শিশু এখন শরণার্থী শিবিরে খাবারের জন্য লাইনে! তিন সপ্তাহ আগে যে খাবার খাওয়ানোর জন্য মায়ের ঘাম ছুটে যেতো সেই খাবারের মূল্য তারা এখন বুঝে গেছে! বুঝে গেছে খাবারও অনিশ্চিত এই দখলদারিত্বের পৃথিবীতে।
ব্রিটেনের রাজপুত্র উইলিয়াম ও রাজবধূ কেট উইলিয়াম সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের ৬ বছরের ছেলে প্রশ্ন করেছে, ‘কেন এই যুদ্ধের সূত্রপাত!’ তাদের কাছে কোন উত্তর ছিল না!
এক ইউক্রেনীয় মা তার বৃদ্ধ মাকে ছেড়ে আসতে পারবেন না তাই নিজের ১১ বছরের শিশু সন্তানের হাতের উল্টাপাশে নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন ভাগ্যের কাছে! ৭০০ মাইল হেঁটে সেই শিশু এসেছে সীমান্ত পেরিয়ে! এরকম হাজারো মানবিক-অমানবিক গল্পের ঠিকানা এখন ইউক্রেন-পোল্যান্ডের মেদিকা সীমান্ত!
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা