গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। গত প্রায় সাত মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধে রাশিয়া ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। এসবের অঞ্চলের মধ্যে চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করতে সেখানে গণভোটের আয়োজন করছে রুশপন্থীরা। এই চার অঞ্চল হল- লুহানস্ক, ডোনেটস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া। এসব অঞ্চলে আজ ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এই গণভোটে রাশিয়ার পক্ষে ফলাফল অনিবার্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে ক্রিমিয়া দখল করেছিল রুশ বাহিনী। ২০১৪ সালে সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির ঘটনা আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। ওই ভোটে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার অন্তর্ভুক্তিতে ৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার এ পদক্ষেপকে ‘ভূমি দখল’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। নির্বাচনে ব্যালটে আসা ফলাফলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে মিত্ররা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এটি একটি বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনি জোর গলায় বলেন, ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার কোনো দাবিই ইউক্রেনীয়দের আত্মরক্ষার অধিকার কেড়ে নিতে পারে না।
রাতে দেওয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এ নির্বাচন আদতে প্রতারণা ও অগণতান্ত্রিক।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে লুহানস্ক, ডোনেটস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যানুসারে, এসব অঞ্চল ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ বা মধ্য ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরির সমান।
রুশ গণমাধ্যমের খবর, আয়োজিত গণভোটে নিযুক্ত কর্মকর্তারা শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত পোর্টেবল ব্যালট বাক্স নিয়ে লুহানস্ক, ডোনেটস্ক খেরসন ও জাপোরিঝিয়া প্রদেশে ঘরে ঘরে যাবেন। পঞ্চম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোট কেন্দ্রের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
গত কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার এ গণভোট নিয়ে আলোচনা চলছে। মস্কোপন্থী কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে জোর কদমে এগিয়ে যায়। সম্প্রতি ইউক্রেন রাশিয়া থেকে তাদেরই কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করে। তবে, এটি যাতে ব্যাহত হয়, সে কারণেই ভোটের তোড়জোড় শুরু করেছে রাশিয়া। সূত্র: সিবিসি, রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান
বিডি প্রতিদিন/কালাম