আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরের ‘খুব নিকটে’ রয়েছে পাকিস্তান, এমন দাবি করেছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার।
দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন হিসেবে কাজ করবে আইএমএফের ঋণ।
ইসলামাবাদে এক সেমিনারে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রতিনিধি পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরের খুব নিকটে রয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত পর্যায়ের চুক্তিটি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করছি।”
আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের এবার চুক্তিটি ১১০ কোটি ডলারের। ইসহাক দার আরও বলেন, “আমি ও আমার দলের সদস্যরা চুক্তিটি সম্পন্ন করতে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিভিন্ন পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এজন্য আমরা যথেষ্ট সময়ও নিয়েছি।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন পাকিস্তান যদি বহিরাগত ঋণের বাধ্যবাধকতা থেকে খেলাপি হওয়া এড়াতে হয়, তবে চুক্তিটি গুরুত্বপূর্ণ। ইশহাক দার মনে করেন, তিনি আগের দুই মেয়াদে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় যে ধরনের সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন, এবারের সমস্যাটি অনেক বেশি গভীর ও আরও জটিল। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসী যে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে এ সংকট থেকে বের করে আনা সম্ভব।
ইসহাক দার বলেন, “অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল জ্বালানি খাতের সংস্কার। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতকে কাঠামোগতভাবে সংস্কার করতে হবে।”
পাকিস্তানের অর্থনীতি এ মুহূর্তে বড় ধরনের সংকটে। দেশটির মুদ্রার ক্রমেই পতনের পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি জনগণের জন্য দিনযাপনকে কঠিন করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সব মিলিয়ে আবারও দেউলিয়াত্বের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পাকিস্তান। যদি এমনটা হয়, তাহলে তা সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ভোগা পাকিস্তানকে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতিতে ফেলবে।
এদিকে ঋণের কিস্তি ছাড় করার জন্য পাকিস্তানের ওপর কঠোর শর্ত আরোপ করেছে আইএমএফ। ইসলামাবাদ অবশ্য ঋণদাতা সংস্থাটির বেশির ভাগ শর্তই মেনে নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি কিংবা বিনিময় হারের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া।
এদিকে পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের মিত্র চীন একমাত্র দেশ হিসেবে ২০০ কোটি ডলার ঋণ পুনঃঅর্থায়নের ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার থেকে ১২০ কোটি ডলার হাতে পেয়েছে। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/কালাম