চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে বেড়েছে চীনের অর্থনীতি। করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ভোক্তা মহামারীকালীন ব্যাঘাত থেকে বেরিয়ে এসেছে। যদিও বৈশ্বিক মন্দার এ সময়ে সামনে থেকে দেওয়া বড় ধাক্কার কারণে আগামীর পথটা খুব বেশি মসৃণ হবে না বলেই ধারণা অনেকের।
বছরওয়ারি হিসেবে প্রথম তিন মাসে চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এর আগের প্রান্তিকে সংখ্যাটা ছিল ২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসে বলা ৪ শতাংশের থেকেও বেশি।গত ডিসেম্বরে করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেয় চীন। তাছাড়া প্রযুক্তি ফার্ম ও সম্পদের ওপর থেকে তিন বছরের কঠোর নজরদারি সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর থেকেই বেইজিংয়ের পুনরুদ্ধার কতটা শক্তিশালী হচ্ছে তা বোঝার জন্য বিনিয়োগকারীরা প্রথম প্রান্তিকের দিকে নজর রাখছিলেন।
সিটি ইনডেক্সের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক ম্যাট সিম্পসন বলেন, “ইন্টারনেটে চীনের প্রথম প্রান্তিকের একটি সুবিধাজনক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, সেটাই তাদের চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশে বজায় রাখতে সাহায্য করছে।”
চীনের প্রবৃদ্ধির ফলে এশিয়ায় মনোভাবও ইতিবাচক হয়েছে। কিন্তু প্রথম প্রান্তিকের তথ্য নিয়ে কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগের কারণ রয়েছে। মূলত দীর্ঘসময় অর্থনীতি বন্ধ থাকার পরে খুলে দেওয়ার কারণে এমন চিত্র দেখা যেতে পারে। ফলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রান্তিকে পরিস্থিতি ঝিমিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন পর্যন্ত চীনের পুনরুদ্ধারের পথ কিছুটা অমসৃণই রয়েছে। খরচ, পরিষেবা ও অবকাঠামো ব্যয় বেড়েই যাচ্ছে। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার মতোই ছিল এবং আগের প্রান্তিকের দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি থেকে বেশি ছিল।
করোনা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার মধ্যে গত বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় অর্ধশতকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে ছিল। তাই চীনের নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, চলতি বছর দেশটির অর্থনীতিকে সমর্থন দেওয়ার জন্য ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে যেন বেকারত্বে কিছুটা লাগাম টানা যায়। কিন্তু ঋণের ঝুঁকি ও কাঠামোগত সমস্যা নিয়ে উদ্বেগের মুখে কিছু পরিকল্পনা পরিবর্তনের সুযোগের অভাবে ভুগছে। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/কালাম