ন্যাটোর সীমান্তে সুরক্ষা জোরদার করতে জার্মানি জানুয়ারি মাসে পোল্যান্ডে যে তিনটি প্যাট্রিয়ট প্রণালী মোতায়েন করেছিল। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সেগুলি চালু রাখতে প্রস্তুত জার্মানি।
অদূর ভবিষ্যতে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। সেইসঙ্গে ইউরোপের সীমান্তে আরো উত্তেজনার আঁচ দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলি সাধারণ নিরাপত্তা আরো জোরদার করার পথে এগোচ্ছে। বিশেষ করে পোল্যান্ডের সীমান্তে সুরক্ষা মজবুত করার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। বেলারুশে রুশ ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর তৎপরতা ও ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে ন্যাটোর বহির্সীমানা বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে জার্মানি সে দেশে তিনটি প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স ইউনিটের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। পোল্যান্ড রাজি হলে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সেগুলি চালু রাখা হবে। পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিউশ ব্লাসসাক গত জুলাই মাসে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউসের কাছে এমন অনুরোধই করেছিলেন। উল্লেখ্য, পেট্রিয়ট সিস্টেমের পাশাপাশি প্রায় ৩০০ জার্মান সৈন্যও ইউক্রেন সীমান্তের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে জামোস শহরে মোতায়েন রয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রেল সংযোগের সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
তবে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আপাতত পেট্রিয়টের মেয়াদ আরও বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা দেখছে না। কারণ ২০২৪ সালে ন্যাটোর ‘কুইক অ্যাকশন রেসপন্স ফোর্স' জার্মানির কিছু প্যাট্রিয়ট ইউনিট ব্যবহার করতে চায়। তখন অন্য ইউনিটগুলির রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন পড়বে।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ন্যাটো সংঘাতের আঁচ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা দুর্ঘটনা হিসেবে ন্যাটোর ভূখণ্ডে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতিজটিল হবার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যেমন গত বছর নভেম্বর মাসে ইউক্রেনের একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পোল্যান্ডের একটি গ্রামে আঘাত হানার পর সীমান্তে আরো সমরসজ্জা বাড়ানো হয়েছে।
রেথিয়নের পেট্রিয়ট প্রণালী এমন হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম। জার্মানি জানুয়ারি মাসে ছয় মাসের জন্য এমন প্রণালী মোতায়েন করেছিল। তবে শীতল যুদ্ধ শেষ হবার পর ন্যাটো দেশগুলিতে এয়ার ডিফেন্স ইউনিটের সংখ্যা কমানো হয়েছিল। কিন্তু গত বছর ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর থেকে এমন প্রণালীর চাহিদা বেড়ে চলেছে। শুধু পোল্যান্ড নয়, সম্প্রতি স্লোভাকিয়া ও লিথুয়েনিয়ায়ও প্যাট্রিয়ট প্রণালী মোতায়েনের কারণে জার্মানি তথা ন্যাটোকে সৈন্য ও উপকরণের বিষয়টি নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
সূত্র : রয়টার্স
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত