ইউক্রেনের রাশিয়ার হামলা চলছেই। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি এই হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। তবে প্রাণপণ লড়াই করে চলেছে ইউক্রেন বাহিনীও।
যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার ওপর অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে রুশ তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা অন্যতম। তবে এই নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে রাশিয়া থেকে ছাড়ে তেল কিনছে ভারত। পরে অবশ্য বাধ্য হয়ে ভারতকে নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখে আমেরিকা।
এদিকে, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ইউক্রেনে। ইউক্রেনবাসীর রোষের মুখেও পড়তে হচ্ছে সেখানে অধ্যয়নরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের।
‘নিজের দেশে ফিরে যাও, ইউক্রেনবাসীর কাছ থেকে প্রায় প্রতিদিনই এমন কথা শুনতে হচ্ছে তাদের। এমতাবস্থায় দেশটিতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের। সেখানে তাদের প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াচ্ছে আতঙ্ক। রাশিয়ার মিত্র দেশ ভারত—এই কারণেই দিন দিন ইউক্রেনে দুর্ভোগ বাড়ছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের একাংশ।
পড়াশোনা শেষ করতে অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থীই যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের একাংশের দাবি, ইউক্রেনের বহু নাগরিকই তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। বিষয়টি নিয়ে এক শিক্ষার্থী বলেছেন, “আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলছেন স্থানীয়রা। গত আট সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি ক্রমশ আরও খারাপ হচ্ছে।”
যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে ইউক্রেন থেকে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থীরা আশা করেছিলেন, ভারতীয় বা কোনও বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শেষ করবেন। কিন্তু সেটা হয়নি বলে দাবি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে আরও ৩ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করতে ইউক্রেনে ফিরে গেছেন।
মধ্যপ্রদেশের এক শিক্ষার্থীর কথায়, “ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিলের নির্দেশিকা অনুযায়ী ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর যারা বিদেশে পড়াশোনা শুরু করেছেন, তারা অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হতে পারবেন না। সেই কারণেই আমি এবং আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীই ইউক্রেনে ফিরতে বাধ্য হয়েছি।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “ইউক্রেনের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন- তোমরা ভারতীয়রা রাশিয়ার ভাল বন্ধু। আমাদের দেশ থেকে চলে যাও।”
অন্য এক শিক্ষার্থীর দাবি, ইউক্রেনের কয়েকটি দোকানে কোনও কিছু কিনতে পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না ভারতীয়দের। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
এক শিক্ষার্থী বলেছেন, “অনেক সময় পানি সরবরাহ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। কীভাবে আমরা বাঁচব? আমরা আতঙ্কে রয়েছি। ভারতে আমাদের পরিবারও ভয়ের মধ্যে আছে।” সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, টাইমস নাউ, ইন্ডিয়ান ডিফেন্স রিসার্চ উইং
বিডি প্রতিদিন/কালাম