বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নানাভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে দাবানল, শক্তিশালী ঝড়, খড়া ও উষ্ণতা- এসব প্রভাব এখন ভোগাচ্ছে বিশ্ববাসীকে। সম্প্রতি লিবিয়ায় সুনামির মতো ঝড় এবং বন্যায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ সেপ্টেম্বর রেকর্ড করেছে ইউরোপ। এগুলোর সবই জলবায়ু পরিবর্তনের ফল।
এবার জানা গেল, এশিয়ার দেশ জাপান ১২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ সেপ্টেম্বর মাস রেকর্ড করেছে।
পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, ১৮৯৮ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে জাপান তার সবচেয়ে উষ্ণ সেপ্টেম্বর পার করেছে।এছাড়া মানবসভ্যতার ইতিহাসে ২০২৩ সালও সম্ভবত সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হতে চলেছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জাপানের আবহাওয়া সংস্থা সোমবার জানিয়েছে- সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরের গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ২.৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩৬.৭৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেশি। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘১৮৯৮ সালে পরিসংখ্যানের রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।’
অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের বহু দেশে সেপ্টেম্বরকে উষ্ণতম মাস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানব সভ্যতার ইতিহাসে ২০২৩ সাল উষ্ণতম বছর হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ফরাসি আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ মেটিও-ফ্রান্স বলেছে, পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটিতে সেপ্টেম্বরের গড় তাপমাত্রা হবে ২১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ১৯৯১-২০২০ সময়ের চেয়ে ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
এছাড়া ১৮৮৪ সালে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যও এবার নিজেদের উষ্ণতম সেপ্টেম্বর রেকর্ড করেছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সামনে এখন যেসব হুমকি রয়েছে- জলবায়ু পরিবর্তন সেগুলোর একটি। বিশ্বে ইতোমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটি মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখনও খুব বেশি ফল মেলেনি।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে শিল্পকারখানাভিত্তিক উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫০ সালের কিছু আগে থেকে। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদন অনুসারে, এরপর থেকে এ পর্যন্ত গত ১৭৩ বছরে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গড় তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি ইতোমধ্যেই বিশ্বের জলবায়ুর ভারসাম্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। একইসঙ্গে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ফেলেছে অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতিকে।
অবশ্য তাপমাত্রার এই বৃদ্ধির জন্য বছরের পর বছর ধরে অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, বনাঞ্চল ধ্বংস এবং বাতাসে নিয়মিত স্বাভাবিকমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি হারে কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃস্বরণকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। সূত্র: দ্য জাপান টাইমস, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/আজাদ