গত শনিবার ভোরে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে অভিযান শুরু করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এতদিন ইসরায়েলের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ফিলিস্তিন। শনিবারই প্রথমবারের মতো আগে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের জুন মাসের যুদ্ধবিরতির পর প্রায় ২ বছর ধরে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা শেষে এই হামলা চালায় হামাস।
প্রথমে মুহুর্মুহু রকেট ইসরায়েলে আঘাত হানে। এতে হতভম্ব হয়ে যায় ইসরায়েল। আর এই হামলা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটিকে খুব সহজেই ফাঁকি দিয়ে।
ইসরায়েল-গাজা সীমান্ত দেয়ালকে বলা হয় ‘স্মার্ট ফেন্স’,। বাংলায় অর্থ করলে দাঁড়ায় অত্যাধুনিক বেড়া বা নিরাপত্তা বেষ্টনি। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তিতে সজ্জিত এই দেয়াল স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘনের কোনো চেষ্টা দেখলেই তা শনাক্ত করতে পারে। তবে সবকিছু ফাঁকি দিয়ে হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা।
এরই মধ্যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল যুদ্ধ। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ দিনে প্রবেশ করেছে এই সংঘাত। অনতিবিলম্বে ইসরায়েলও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। তারা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। পাল্টা আক্রমণে দেশটি গাজায় মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এছাড়াও ইসরায়েলের হামলায় পাঁচ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলে নিহত ছাড়িয়েছে ১৩০০। এর মধ্যে ২২০ সেনা সদস্য রয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজার ৩০০।
হামলার পরপরই নানা দিক থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করে, হামাসের এই হামলায় সহায়তা করেছে ইরান। তবে আসলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের হামলা দেখে ইরান নিজেই হতবাক হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে এমন তথ্যই উঠে এসেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা দেখে ইরানের প্রধান প্রধান নেতারা বিস্মিত হয়ে গেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অবশ্য হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত মঙ্গলবার বলেন, হামাসের এই হামলার সাথে ইরানের যোগসূত্রের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিশ্চিত নয়।
তিনি বলেন, “আমরা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই প্রশ্নটি নিয়ে প্রতিদিন কথা বলছি। আমরা আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করছি যে, আমাদের কাছে এই বিষয়ে আরো কোনো তথ্য আছে কিনা।”
এছাড়া ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নিজেও অস্বীকার করেছে ইরান। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/আজাদ