অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে থাকা ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দখলদার ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জাতিসংঘকে এ কথা জানানো হয়েছে।
তবে গাজার ওই অঞ্চল ছেড়ে না যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তাদের ভাষ্য, তারা মাতৃভূমি ছেড়ে কোথাও যাবেন না।
ইসরায়েলের হুমকি প্রত্যাখ্যান করে গাজার বাসিন্দা ফিলিস্তিনি শিক্ষাবিদ এবং লেখক রেফাত আলিরের বলেছেন, তিনি এবং তার পরিবার বাড়িতেই থাকবেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেন, “আমরা এখানেই থাকছি। যদিও ইসরায়েলের বোমা হামলার ভয়ে কিছু পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। আমাদের অনেকেই বিশ্বাস করে, যদি আমাদের ওপর বোমা ফেলা হয়, তাহলে যেখানেই যাই না কেন, সেখানে একই পরিণতি হবে। ফিলিস্তিনিদের আরেকটি নাকবা/বাস্তুচ্যুতি রোধ করতে হবে।”এদিকে, হামাসের রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যুরোর প্রধান বাসেম নাইম বলেছেন, গাজার ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে কোথাও যাবে না। যদিও ইসরায়েল উপত্যকার উত্তর অংশ থেকে ১০ লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ আশ্রয়ের যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে দুটি বিকল্প আছে- এই দখলদারিত্বকে পরাস্ত করা অথবা আমাদের বাড়িতে মারা প্রাণ দেওয়া।”
তিনি বলেন, “আমরা গাজা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না। আমরা আরেকটি নাকবার পুনরাবৃত্তি হতে দিবো না।
এ সময় নাকাবা বলতে তিনি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল যখন গঠিত হয়েছিল তখন ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির প্রতি ইঙ্গিত করেন তিনি।
বাসেম নাইম বলেন, শনিবার হামাস যে হামলা চালিয়েছে সেটি ১৭ বছর ধরে সহ্য করা গাজার “শ্বাসরুদ্ধকর অবরোধের” ফল।
তিনি বলেন, “আমরা নীরবে মারা যাচ্ছিলাম। আমরা এই উন্মুক্ত কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্তরে আমাদের আওয়াজ তোলার চেষ্টা করেছি ... আমরা যা করছি তা প্রতিরক্ষামূলক কাজ, আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করছি।”
বাসেম নাঈম বলেন, “আমরা স্বাধীনতা ও মর্যাদায় বাঁচতে চাই, আমাদের এই দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি দিতে হবে। ইসরায়েলি দখলদারিত্বই হলো এই অঞ্চলের সমস্ত অনিষ্টের মূল।”
এদিকে, বিগত ছয় দিন ধরে ইসরায়েলের চরম নৃশংসতার শিকার গাজার বাসিন্দারা। দখলদার বাহিনীর হাত থেকে থেকে ছাড় পাচ্ছে না শিশু ও নারীরাও। গত ছয় দিনের অব্যাহত হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১,৫৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ শিশু রয়েছে। আর নারী রয়েছে ২৭৬ জন। এছাড়াও আহত হয়েছে ৬,৬১২ জন।
দখলদার বাহিনী শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি। গাজায় খাবার সরবরাহ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিও বন্ধ করে দিয়েছে। জিম্মিদের মুক্তি না দিলে এগুলোর কোনো কিছুই গাজায় সরবরাহ না করার অঙ্গীকার করেছে তারা। ফলে গাজায় মানবিক সংকট গভীর থেকে আরো গভীর হচ্ছে। সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আজাদ