২৭ মার্চ, ২০২৪ ১৪:৪৩

আবারও সামরিক বিস্ময়ের ঘোষণা দিল ইয়েমেনের হুথি

অনলাইন ডেস্ক

আবারও সামরিক বিস্ময়ের ঘোষণা দিল ইয়েমেনের হুথি

আব্দুল মালেক আল-হুথি

ইয়েমেনের জাতীয় প্রতিরোধ দিবসে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি নেতা আব্দুল মালেক আল-হুথি বলেছেন, আমেরিকার নীতির প্রতি আরব শাসকদের অন্ধ আনুগত্য এই দেশগুলোর জন্যই ক্ষতিকর। 

একই সাথে ইয়েমেনের জনগণকে সমর্থন করার জন্য ইরান, হিজবুল্লাহ এবং ইরাকের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানান তিনি।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের (হুথি) এই নেতা, ইয়েমেনের জাতীয় প্রতিরোধ দিবসের ৯ম বার্ষিকীতে এক বক্তৃতায়, আগ্রাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরায়েলকে তিন শয়তানি চক্র হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে পরবর্তী বছরকে এই তিন আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অলৌকিক ও বিস্ময়কর সামরিক শক্তি প্রদর্শনের বছর হবে বলে উল্লেখ করেছেন।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের এই নেতা হানাদারদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের জনগণের শক্ত মনোবলের প্রশংসা করে বলেন, তার দেশের জনগণ বিদেশি আগ্রাসন শুরুর নবম বছরে এখনও প্রতিরোধ করে যাচ্ছে।

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ওই আগ্রাসনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী ছিল ব্রিটেন ও ইসরায়েল আর আরব দেশগুলোর সামরিক জোটের মাধ্যমে ওই আগ্রাসী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছিল।

আবদুল মালেক আল-হুথি তার বক্তৃতার আরেকটি অংশে, আমেরিকা, ব্রিটেন ও ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইয়েমেনের জাতীয় প্রতিরোধ দিবসের ১০ম বার্ষিকীতে, ইয়েমেনি সেনাবাহিনী সেদেশের জনগণ এবং ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের সমর্থনে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামরিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের সাফল্যের প্রমাণ দেবে।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা ইয়েমেনি যোদ্ধাদের পূর্ণ প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি এবং ইয়েমেনের জনগণের অভূতপূর্ব রাজনৈতিক সতর্কতা এবং জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সংহতি ও অভ্যন্তরীণ ঐক্যের কথা উল্লেখ করে বলেন তার দেশে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরায়েলের আগ্রাসন পূর্বপরিকল্পিত ছিল।

আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, হুথি নেতা আব্দুল মালেক আল-হুথি আরও বলেছেন, ইয়েমেনে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন ও ইসরায়েল। আর কয়েকটি আরব দেশের সামরিক জোট তা বাস্তবায়ন করেছিল। দীর্ঘ আট বছরের ওই আগ্রাসনে ইয়েমেনের দুই লাখ ৮২ হাজার ৮৭৯ নাগরিক হতাহত হয়েছে।

তিনি বলেন, পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে টার্গেট করে ইয়েমেনে হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু আমরা সকল আরব ও অন্য মুসলিম দেশের সাথে সুসম্পর্ক চাই এবং কোনও আরব দেশের সাথে আমাদের শত্রুতা নেই। তাই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের গড়িমসি করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। আমরা এখন আমেরিকা, ইসরায়েল ও ব্রিটেনের মতো অশুভ শক্তির সাথে সম্মুখ লড়াইয়ে আছি। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের উচিত উত্তেজনা কমিয়ে এনে শান্তির পথে হাঁটা। শান্তি প্রতিষ্ঠার অর্থ হল অবরোধ, আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো এবং বন্দীদের বিনিময় ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা তার বক্তব্যের অন্য অংশে বলেছেন, “আমেরিকার নীতি বাস্তবায়ন করে কোনও আরব দেশের স্বার্থ রক্ষা হবে না এবং আমরা সবাইকে আমেরিকার অন্ধ আনুগত্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।”

আবদুল মালেক হুথি ন্যায়সঙ্গত সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বিপদের সময় ইয়েমেনের পাশে থাকার জন্য ইরান, হিজবুল্লাহ ও ইরাকের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানান।

আনসারুল্লাহ নেতা বলেছেন, ফিলিস্তিনি জাতির সমর্থনে আমাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা প্রথম থেকেই ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছি।

উল্লেখ্য, এর আগেও সামরিক বিস্ময়ের ঘোষণা দিয়েছিল হুথি। এর কিছু দিন পর শব্দের চেয়ে ৮ গুণ গতির হাইপারসনিক মিসাইল উদ্বোধনের ঘোষণা দেয় হুথি গোষ্ঠী।  সূত্র: পার্সটুডে

বিডি প্রতিদিন/আজাদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর