ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কুলিং টাওয়ারে আগুন লাগার ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করেছে কিয়েভ ও মস্কো। রবিবার এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর এক দিন পরই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন রুশ সেনারা।
ইউক্রেন, রাশিয়া ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানায়, আগুন লাগার ঘটনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যাওয়া বা পরমাণু সুরক্ষায় খারাপ প্রভাব পড়েছে, এমন কিছু শনাক্ত করা যায়নি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে মস্কোর নিয়োজিত কর্মকর্তা ভ্লাদিমির রোগোভ বলেন, বার্তা পাঠানোর অ্যাপ টেলিগ্রামে আজ সোমবার দেওয়া একটি পোস্টে দেখা গেছে, কুলিং টাওয়ারে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
তিনি ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে মস্কোর নিযুক্ত গভর্নর ইয়েভজেনি বালিটস্কি এ ঘটনার জন্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেছেন।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, রুশ দখলদাররা এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটায়। তারা ইউক্রেনের ওপর এর দায় চাপিয়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। সেখানকার প্রেস সার্ভিসও একই তথ্য জানিয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে নিয়োজিত আইএইএর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সেখানে পরমাণু সুরক্ষায় কোনো খারাপ প্রভাব পড়েনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে আইএইএ জানায়, সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উত্তর দিক থেকে শক্তিশালী কালো ধোঁয়া উড়ে আসতে দেখেন। সন্ধ্যায় সেখানে কয়েক দফা বিস্ফোরণে শব্দ শুনেছিলেন তারা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়, একটি কুলিং টাওয়ারে সম্ভবত ড্রোন হামলা হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, এ ঘটনার জন্য রাশিয়াকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। ইউক্রেনের অধীনেই জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা ও সম্পূর্ণ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রেস সার্ভিস জানায়, অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানকার ছয়টি চুল্লির সবগুলোই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত আর কোনো বিস্ফোরণ বা বিপদের ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন গভর্নর ইয়েভজেনি বালিটস্কি।
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এনারহোদার শহরে জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইউক্রেনের এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ এই কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল