টানা দুই বছর ধরে পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইউক্রেন। এই সময়ে রাশিয়ার বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। ববং যুদ্ধে রাশিয়ার কাছে নিজেদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল হারিয়েছে দেশটি। এছাড়া, রুশ বাহিনীর হামলায় ধ্বংসলীলায় পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল। পাশাপাশি যুদ্ধে টিকে থাকতে পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তার দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি অনুরোধ করেছেন যে, তিনি যেন যুদ্ধ থামাতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বাধ্য করেন।
মোদিকে জেলেনস্কি জানান, ভারত অর্থনৈতিক ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি দেশ। সেই প্রভাব খাটিয়ে তিনি যেন পুতিনকে বাধ্য করেন যুদ্ধ থামাতে!
এর আগে, রাশিয়া ও ইউক্রেন সফরে গিয়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ সমাপ্তিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকার পালনের কথা জানান নরেন্দ্র মোদি। এতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি আগ্রহের সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেন। এরপরেই গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সফরে যান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
জানা গেছে, জেলেনস্কি মোদিকে অনুরোধ করেছেন রাশিয়ার হাতে জিম্মি এক হাজার শিশুকে ইউক্রেনে ফিরিয়ে আনতে তিনি যেন জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বরাত দিয়ে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন। তখন তিনি মোদিকে অনুরোধ যে, তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাধ্য করেন, যাতে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে বাধ্য হয়।
কারণ হিসেবে জেলেনস্কি করেন যে, ভারত বিশ্বে একটি অর্থনৈতিক ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে বড় একটি শক্তি। তাকে উপেক্ষা করা কঠিন। ভারত সস্তায় জ্বালানি শক্তি সরবরাহ ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার অর্থনীতিকে যেন ‘ব্লক’ করে দেয়।
এর আগে, গত আগস্টে কিয়েভ সফরকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনেস্কিকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান মোদি।
সেই সময় জেলেনস্কিকে মোদি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রথম থেকেই শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ভারত।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ ভালো। রাশিয়া থেকে অস্ত্রের পাশাপাশি তেল আমদানি করে থাকে দেশটি।
জেলেনস্কি বলেন, পুতিনের ওপর মোদির ‘দুর্দান্ত প্রভাব’ রয়েছে। ভারত চাইলে সত্যিকারের একটা পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে, জেলেনেস্কি এটাও বলেন, আমি মনে করি না যে, শুধু মুখে বললেই আজ যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে!
বিডি প্রতিদিন/ইই