ব্রিটেনে পৌঁছানোর লক্ষ্যে একটি ছোট নৌকা করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে তিনজন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে অনেকে পানিতে পড়ে গেলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে ক্যালাইসের কাছে স্যাঙ্গাতে উপকূলে একটি নৌকায় উঠতে গিয়ে লোকজন পানিতে পড়ে যায়।
পরে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। উদ্ধার করা আরও ৪৫ জনকে হাইপোথার্মিয়ার জন্য (শরীরে টেম্পারেচার কমে যাওয়া) চিকিৎসা দেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যের সীমান্ত নিরাপত্তা ও আশ্রয়মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল বলেন, “প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে কারণ ‘ছোট নৌকার ব্যবসা পরিচালনাকারী নির্মম অপরাধীরা’ মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় চাপিয়ে দিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সরকার এই গ্যাংগুলোকে ধ্বংস করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ফ্রান্স সরকারকে সহযোগিতা করছে।”
স্যাঙ্গাতের মেয়র গাই আলেমঁদ বলেন, “এটা কখনওই থামবে না। বারবার চ্যানেল পারাপার চলছে, কোনও বিরতি ছাড়াই।”
তিনি জানান, সাতজনকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
ফরাসি কোস্টগার্ড জানিয়েছে, সাগরে কোনও জীবিত উদ্ধার বাকি আছে কিনা, সে ব্যাপারে তল্লাশি চলছে।
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস নিশ্চিত করেছে, ঘটনাটি ফরাসি জলসীমায় ঘটেছে এবং ফরাসি কর্তৃপক্ষ তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ও তদন্ত করছে।
পিয়ের-অঁরি দ্যুমো, যিনি পা-দ্য-ক্যালাইস অঞ্চলের বলেন, “এভাবে চ্যানেল পার হওয়ার যেকোনও প্রচেষ্টাই অত্যন্ত বিপজ্জনক- তবে বছরের এই সময় তা আরও প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।”
তিনি বলেন, “উদ্ধার দল দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম হলেও বর্তমানে পানির তাপমাত্রা এমন যে, পানিতে মাত্র কয়েক মিনিট কাটালেই তা প্রাণঘাতী হতে পারে।”
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৬,০০০-এর বেশি মানুষ ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন, যা ২০২৩ সালে ছিল ২৯,৪৩৭ জন।
জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) জানিয়েছে, এ বছর চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ৭৭ জন মারা গিয়েছে।
হোম অফিস জানিয়েছে, তারা মানবপাচার চক্র ধ্বংস করতে ‘কিছুতেই পিছু হটবে না,’ এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার চ্যানেল পারাপারে সহায়তাকারী চক্রগুলোকে নির্মূল করাকে তার শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ