যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের ঘটনায় হার্ভার্ড শুক্রবার বোস্টনের ফেডারেল কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের কারণে সঙ্গে সঙ্গে এবং ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি এবং তাদের ৭ হাজারেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী।
হার্ভার্ড দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ মার্কিন সংবিধান ও অন্যান্য আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষায়, ‘একটি কলমের এক আঁচড়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত হার্ভার্ডের এক চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীকে মুছে ফেলার সামিল। এই শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও জানায়, তারা এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও অযৌক্তিক বলে মনে করে। হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, ‘এই পদক্ষেপ হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও গবেষকের ভবিষ্যৎকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। যারা স্বপ্ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে, এটি তাদের জন্য এক বড় হুমকি।’
মামলার পর বিশ্ববিদ্যালয় আশাবাদী, আদালত একটি অস্থায়ী স্থগিতাদেশ জারি করবে। হার্ভার্ড প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা তাদের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশে দাঁড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
এর আগে, মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম হার্ভার্ডকে জানিয়ে দেন, তাদের ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম’ (SEVP)-এর স্বীকৃতি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে সহিংসতা, ইহুদিবিদ্বেষ এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ততা সহ্য করছে, যা তাদের এই সিদ্ধান্তের কারণ।
নোয়েম আরও বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নয়, বরং একটি সুবিধা। হার্ভার্ড সেই সুযোগের যথাযথ ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, এটি হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা। এর আগে তারা পাঠ্যক্রম, ভর্তি ও নিয়োগ নীতিতে হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে একটি মামলা করে। গত এপ্রিল মাসে প্রশাসনের অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে অংশগ্রহণের তথ্য জমা দেয়, তবে তারা কী ধরণের তথ্য দিয়েছে তা এখনো প্রকাশ করেনি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল