ইউরোপের পাঁচটি দেশজুড়ে চালু হতে যাচ্ছে এক নতুন স্লিপার ট্রেন পরিষেবা। যা পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। প্রায় ৭৪৫ মাইল দীর্ঘ এই যাত্রাটি শুরু হবে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে, আর শেষ হবে ক্রোয়েশিয়ার মনোমুগ্ধকর শহর রিজেকা-তে। এই যাত্রায় আপনি প্রকৃতির এক শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
ইউরোপের হৃদয় ছুঁয়ে, এক অবিস্মরণীয় রেলযাত্রা!
বহু প্রতীক্ষিত এই রেল পরিষেবাটি ওয়ারশ থেকে যাত্রা শুরু করে, পোল্যান্ড, চেকিয়া, অস্ট্রিয়া, স্লোভেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়ার বৈচিত্র্যময় ভূখণ্ড পেরিয়ে রিজেকায় পৌঁছাবে। এটি শুধুমাত্র একটি ট্রেন যাত্রা নয়, বরং এটি ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক মেলবন্ধন।
পথের সাথী যারা
এই নতুন পথে ট্রেনটি ওপোচনো, কাতোভিচ, রাইবনিক, চালুপকি, ভিয়েনা, লুবলিয়ানা, পোস্টোজনা এবং ওপাতিয়া সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর অতিক্রম করবে। বর্তমানে ওয়ারশ থেকে রিজেকা যেতে প্রায় ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে এবং যাত্রীদের তিনবার ট্রেন পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু এই নতুন পিকেপি ইন্টারসিটি পরিষেবাটি সেই দুর্ভোগের অবসান ঘটাবে। যদিও গন্তব্যে পৌঁছাতে ১৯ ঘণ্টা সময় লাগবে (বিকেল ২টায় ওয়ারশ থেকে ছেড়ে পরের দিন সকাল ৯টায় রিজেকায় পৌঁছাবে), তবুও এটি বর্তমানের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় বাঁচাবে।
ভ্রমণের খরচ এবং সময়সূচী
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি একটি সুসংবাদ, কারণ টিকিটগুলো হবে বেশ সাশ্রয়ী। ২০০ পোলিশ জ্লোটি (প্রায় £৩৯.৫৩) থেকে শুরু হবে এর মূল্য। গ্রীষ্মের মাসগুলোতে সপ্তাহে চারবার, অর্থাৎ মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং রবিবার এই ট্রেনটি চলাচল করবে।
ভ্রমণসঙ্গীর সুবিধা
এই স্লিপার ট্রেনে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য থাকছে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা এবং বিছানাসহ কউশেটে কার। আপনাকে ঘুমের ব্যাগ আনার প্রয়োজন নেই, কারণ বিছানার চাদর সরবরাহ করা হবে। ক্ষুধা লাগলে চিন্তার কিছু নেই! ওয়ারশ এবং ভিয়েনার মধ্যে একটি ডাইনিং কার থাকবে, যেখানে গরম খাবার পরিবেশন করা হবে। এছাড়া, কউশেটে কারের যাত্রীদের সহায়তার জন্য একজন 'ওয়ার্স' স্টাফ সদস্য সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকবেন।
পথে যা আছে
ভিয়েনায় ট্রেনটি প্রায় রাত ১০টায় থামবে। এখান থেকে কিছু কোচ ক্রোয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ভিন্ন পথে যাত্রা করবে। মধ্যরাতের পর ট্রেনটি স্লোভেনিয়ায় পৌঁছাবে, যেখানে এটি বুদাপেস্ট থেকে শুরু হওয়া ইস্ট্রিয়া পরিষেবার সাথে যুক্ত হবে এবং সকালের নাস্তার ঠিক সময়ে ক্রোয়েশিয়ার দিকে এগিয়ে যাবে।
এই নতুন ট্রেন পরিষেবাটি ইউরোপীয় রেলযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: মেট্রো
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল