দুর্ভিক্ষ আর মহামারীর আরও দ্বারপ্রান্তে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি লাগাতার হামলা এবং ত্রাণ বহর প্রবেশে কড়াকড়ি পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর করে তুলেছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চরম দুর্ভিক্ষ ও মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ১০০-রও বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ), অক্সফ্যামসহ একাধিক আন্তর্জাতিক এনজিও এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় এখন গণদুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং সেখানকার মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ তীব্র অপুষ্টি দেখা যাচ্ছে। পানিবাহিত রোগ যেমন তীব্র ডায়রিয়া মহামারী আকারে ছড়াচ্ছে। বাজারে খাবার নেই, রাস্তাঘাটে আবর্জনার স্তূপ, আর প্রাপ্তবয়স্করা ক্ষুধা ও পানিশূন্যতায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছেন।
এনজিওগুলোর দাবি, গাজায় বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ২৮টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে, যা ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য খুবই কম। জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাটি ব্যর্থ হয়নি বরং এটি কার্যকর হতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, “এখন আর অনুমতির অপেক্ষা করার সময় নেই। জরুরি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি তুলতে হবে, প্রশাসনিক বাধা সরিয়ে নিতে হবে, সব সীমান্ত পয়েন্ট খুলে দিতে হবে, এবং গাজার প্রতিটি মানুষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে।”
তারা আরও বলেছে, বিমানের মাধ্যমে ত্রাণ ফেলা বা সীমিত চুক্তিভিত্তিক উদ্যোগগুলো বাস্তবে পরিস্থিতি আড়াল করার একটি ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে। এগুলো কোনোভাবেই রাষ্ট্রগুলোর আইনি ও নৈতিক দায়িত্বের বিকল্প হতে পারে না।
বিবৃতির শেষাংশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, রাষ্ট্রগুলোর এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে আর বাঁচানোর মতো কেউই অবশিষ্ট থাকবে না।
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল