বাংলাভাষীদের ওপর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য চলছে নির্যাতন-নীপিড়ন। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অভিযোগের তীর ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দিকে। এবার মমতা তাদের রুখে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বাংলা ভাষার ওপর নেমে আসা ‘ভাষা-সন্ত্রাস’ নিয়ে সরব হলেন মমতা বলেন, প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে কিন্তু মাতৃভাষাকে রক্ষা করতেই হবে।
মমতা বলেন, ‘ভাষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি জাতির মেরুদণ্ড। শিশুরা যেমন প্রথম ‘মা’ বলতে শেখে, সে রকম আমরা মাতৃভাষায় কথা বলা শিখি। সেই বাংলা ভাষার উপর আজ ভাষা-সন্ত্রাস চলছে। বাংলা ভাষায় যাঁরা কথা বলেন, তাঁদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। আর একটা ভাষা আন্দোলন চাই, সমাজকে জাগ্রত করতে হবে।’
মমতা জানান, সংখ্যার নিরিখে বাংলা ভাষা সারা পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে। বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি লোক এই ভাষায় কথা বলেন। অথচ এই ভাষায় কথা বলার জন্য জেলে যেতে হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁকে দেশান্তরী হতে হচ্ছে! বাংলা চলচ্চিত্র ও গানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষাকে অপমান করবেন না। অন্য ভাষাকে অসম্মান করতে বলছি না কিন্তু বাংলায় যাঁরা গান গাইছেন, কাজ করছেন, তাঁদের একটু বেশি গুরুত্ব দিন। সব ভাষার সমন্বয়ে ঐক্য ও সম্প্রীতি গড়ে উঠুক।’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বলার জন্য একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিককে আটক হতে হয়েছে পুলিশের হাতে। কাউকে হেনস্থা করা হয়েছে, কাউকে আবার ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশে। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও বাংলা ভাষার অধিকার নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। তার দাবি, পশ্চিমবঙ্গের একের পর এক উন্নয়নে ভয় পেয়ে বঞ্চনার রাজনীতি করছে বিজেপি। শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেও মমতা বলেন, ‘বাংলা রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, নজরুলের জন্ম দিয়েছে। বাংলা থেকেই লেখা হয়েছে জাতীয় সঙ্গীত। বাংলা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। নবজাগরণ হয়েছে বাংলা থেকেই। সেই ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে কেন? বাংলার মাটি দুর্বৃত্তদের হবে না। বাংলার মানুষকে যদি বাংলা বলার জন্য বাইরে গ্রেফতার করা হয়, তা হলে এই লড়াই দিল্লিতে হবে। দরকারে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল