চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নাইজেরিয়ার কাতসিনা রাজ্যে অপুষ্টিতে কমপক্ষে ৬৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)।
চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতায় জর্জরিত উত্তর নাইজেরিয়ার এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক দাতাদের অনুদান হ্রাস পাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবারের ওই বিবৃতিতে এমএসএফ বলেছে, আমরা এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক দাতাদের বাজেট কমানোর ভয়াবহ প্রভাব প্রত্যক্ষ করছি, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায়।
সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন মাসের শেষ পর্যন্ত কাতসিনায় প্রায় ৭০ হাজার অপুষ্ট শিশু চিকিৎসা নিয়েছে এমএসএফ-এর বিভিন্ন কেন্দ্রে। এদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
এমএসএফ আরও বলেছে, শুধু চিকিৎসা নয়, উত্তর নাইজেরিয়ায় অপুষ্টি প্রতিরোধেও জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
এ অঞ্চলে অপুষ্টির হার বাড়ার পেছনে রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব, টিকাদানের নিম্ন হার, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সীমিত সুযোগ, সহিংসতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক সংকটও দায়ী।
সংস্থাটি জানিয়েছে, কাতসিনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে সবচেয়ে গুরুতর ধরনের অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০৮ শতাংশ বেড়েছে। দুঃখজনকভাবে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্রে ৬৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে—বিবৃতিতে বলা হয়।
আফ্রিকার দেশটির এ অঞ্চল আগে থেকেই সশস্ত্র বিদ্রোহে জর্জরিত। কাতসিনায় সশস্ত্র ডাকাত দলের তৎপরতা ব্যাপক, যার ফলে বহু মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এই সন্ত্রাস মোকাবেলায় সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলও কাজ করছে, তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
সূত্র: আলজাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজিম