ফিলিস্তিনের গাজার বৃহত্তম শহর গাজা সিটিতে ‘নজিরবিহীনশক্তি’ ব্যবহার করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটিতে তাদের স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা শহরের বাসিন্দাদেরকে শহর ত্যাগ করতে বলেছে।
গাজা সিটি থেকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ধ্বংস করে দেওয়া এবং জাতিসংঘ ঘোষিত দুর্ভিক্ষের কবলে পড়া যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পরও গাজা শহর দখলের জন্য বিমান ও ট্যাঙ্ক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই আক্রমণ এমন এক সময় চালানো হচ্ছে, যখন কয়েকটি পশ্চিমা সরকার আগামী সপ্তাহে একটি জাতিসংঘ সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই সরকারগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সও রয়েছে।
গত মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের স্থল অভিযান শুরু করেছে এবং কয়েকদিন ধরে বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তবে অনেক ফিলিস্তিনি জানাচ্ছে যে এই যাত্রা অতিরিক্ত ব্যয়বহুল এবং তারা জানে না যে তারা কোথায় যাবে।
পশ্চিম গাজা সিটির একজন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি খালেদ আল-মাজদালাভি ‘তীব্র ও অবিরাম’ গোলাবর্ষণের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে, আমরা দক্ষিণে পালানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা কোনো পরিবহনের উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।’
৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি আরো জানিয়েছেন, ‘আমরা অবশেষে চলে যাওয়ার পথ পেয়েছি। আমাদের জিনিসপত্র গোছালাম এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি, এবং ড্রাইভার আমাদের ফোনে উত্তর দিচ্ছে না।’
জাতিসংঘ আগস্টের শেষের দিকে অনুমান করেছে যে গাজা শহর এবং এর আশেপাশে প্রায় দশ লাখ মানুষ বাস করছে।
শুক্রবার সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে আগস্টের শেষের দিক থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত একটি উদ্ধার বাহিনী গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে।
সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র শুক্রবার একটি পোস্টে জানান, ৪৮ ঘণ্টা আগে খুলে দেওয়া একটি অস্থায়ী বাস্তুচ্যুতি পথ বন্ধ করা হয়েছে, এবং এখন দক্ষিণে যাওয়ার একমাত্র পথ হল আল-রাশিদ সড়ক, যা ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আভিচায় আদ্রাই এক্স-এ এক পোস্টে গাজা সিটির বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, হামাস ও অন্যান্য সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নজিরবিহীনশক্তি দিয়ে অভিযান চালিয়ে যাবেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।’
সূত্র : এএফপি
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত