শিরোনাম
রবিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কট্টর ডানপন্থার উত্থান হতে পারে যুক্তরাজ্যে

ব্রেক্সিট সঙ্কট

যুক্তরাজ্যের পরিবহনবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস গ্রেইলিং বলেছেন, ব্রেক্সিট আটকে গেলে তা যুক্তরাজ্যে কট্টর ডানপন্থার উত্থানে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বের হতে না পারলে গণভোটে রায় জানানো এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ নিজেদের ‘প্রতারিত বোধ’ করবে বলেও মন্তব্য তার। ডেইলি মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ এ মন্ত্রী বলেছেন, ব্রেক্সিট না হলে শতকের পর শতক ধরে চলে আসা যুক্তরাজ্যের ‘উদারনৈতিক’ রাজনীতির সমাপ্তি ঘটতে পারে। গ্রেইলিং যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন বলে খবর বিবিসির।

 সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর গত বছরের শেষ দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে একটি সমঝোতায় উপনীত হলেও তাতে তার টোরি ও বিরোধী লেবার পার্টির অধিকাংশ সদস্যরই সমর্থন নেই। ব্রেক্সিট নিয়ে মে’র ওই চুক্তিটি কার্যকর হতে হলে আগে তা হাউস অব কমন্সে পাস হতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ এমপির বিরোধিতার মুখে এটি অনুমোদিত হবে না বুঝতে পেরে কমন্সের ভোট পিছিয়ে দিয়ে গত বছরই একদফা ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। তাতেও কোনো সফলতা না আসায় পরে মন্ত্রিসভা ও দলের সংসদ সদস্যদের চুক্তিতে রাজি করতে নানা দেন-দরবারে নামেন তিনি। মঙ্গলবার কমন্সে ওই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির দিন নির্ধারিত রয়েছে। মে’র পক্ষের মন্ত্রীরা বলছেন, ইউরোপের সঙ্গে কোনো চুক্তি ছাড়াই যদি ব্রেক্সিট কার্যকর হয়ে যায়, তাহলে তা যুক্তরাজ্যকে ‘পঙ্গু’ করে দেবে। এদিকে চুক্তির বিরোধিতা করা অনেকেই চাইছেন, ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা পিছিয়ে দিতে। যদিও তা সম্ভব হবে নয় বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের। গ্রেইলিংয়ের আশা, এসব বিবেচনায় নিয়েই সংসদ সদস্যরা মঙ্গলবার ভোট দেবেন। ‘কষ্টকর ও দীর্ঘ চিন্তা শেষে ভোট দেওয়া উচিত মানুষজনের। এটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে আমি কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য, যারা ব্রেক্সিটের সমর্থনে ছিলেন এবং অন্যদেরও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি’, ডেইলি মেইলকে বলেন এ পরিবহনবিষয়ক মন্ত্রী। যুক্তরাজ্য যদি ইউরোপ থেকে বের হতে ব্যর্থ হয় তাহলে ব্রিটিশ রাজনীতিতে ‘ভিন্ন সুর’ দেখা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, সেরকমটা হলে ‘তুলনামূলক অসহিষ্ণু সমাজ’ ও ‘আরও জাতীয়তাবোধসম্পন্ন জাতি’ দেখা যাবে। ‘এটা আমাদের দেশে জনপ্রিয় উগ্র ডানপন্থী শক্তিগুলোর জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দেবে, যেমনটা আমরা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে দেখছি,’ বলেন গ্রেইলিং। টোরি এ মন্ত্রী এমনটা ভাবলেও তার সহকর্মী সংসদ সদস্যদের অনেকেই কিন্তু তেমন আশঙ্কা দেখছেন না। কয়েকদিন আগে কনজারভেটিভ পার্টির প্রভাবশালী নেতাদের অনেকেই যুক্তরাজ্য সম্ভবত ‘চুক্তি ছাড়াই’ ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারি কারেন ব্র্যাডলি বলেছেন, চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে গেলে তা যুক্তরাজ্যজুড়ে ‘বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টি করতে পারে।

সর্বশেষ খবর