গোটা ভারতেই নাগরিকপঞ্জি হবে জানিয়ে আসামের এখনকার তালিকা বাতিলের ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার রাজ্যসভায় তিনি বলেছেন, সারা দেশের সঙ্গেই আসামে নতুন করে এনআরসি হবে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতির এ বক্তব্যে উত্তর-পূর্ব রাজ্যটির নাগরিকপঞ্জি কার্যত বাতিল হওয়ার পথে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া। চলতি বছর প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জিতে দেশটির ১৯ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়েছিলেন, যা নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়। বাদ পড়াদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বিপদে পড়ে রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপিও। শুরুর দিকে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাসই বেশি ছিল। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর তা বাতিলের দাবিতেও তাদের সরব হতে দেখা গেছে। রাজ্যসভায় অমিত শাহ বলেছেন, ‘আসামে যা হয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হয়েছিল। নাগরিকপঞ্জি সারা দেশে হবে, সেসময় আসামেও হবে। কোনো ধর্মের কারোরই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’ তার এ বক্তব্যের প্রতিধ্বনি মিলেছে আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে হওয়া নাগরিকপঞ্জি পুরোপুরি বাতিল করে সারা দেশের সঙ্গে আসামেও নতুন করে এনআরসি হোক।’ আনন্দবাজার বলছে, রাজ্যসভায় অমিত শাহর বক্তব্যের মাধ্যমে আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ‘ছয় বছরের পরিশ্রম, ১৬০০ কোটি টাকা খরচ, হেনস্তা ও বহু মানুষের মৃত্যুর’ যোগফল কার্যত শূন্যে গিয়ে ঠেকছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, আসামে নাগরিকপঞ্জি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। আসাম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চকে নাগরিকপঞ্জি তৈরির ভিত্তিবর্ষ ধরা হয়েছিল। ভবিষ্যতে দেশের সব রাজ্যে যখন এনআরসির কাজ শুরু হবে তখন অতীতের একটি নির্দিষ্ট দিনকে ধরে তার ভিত্তিতে তালিকা হবে। কোন বছরের কোন তারিখের ভিত্তিতে ওই কাজ শুরু হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। একাধিক ভিত্তিবর্ষ ধরে নাগরিকপঞ্জি করার কোনো যৌক্তিকতা নেই জানিয়ে আসামের এখনকার নাগরিকপঞ্জি বাতিলেই ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান, জানিয়েছে আনন্দবাজার। বিরোধীরা বলছে, বাদ পড়াদের তালিকায় ১৩ থেকে ১৪ লাখ হিন্দু থাকায় ভোট ব্যাংকে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় বিজেপি এখন তালিকা বাতিলের পক্ষে হাঁটতে চাচ্ছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে মামলার বাদী আসাম পাবলিক ওয়ার্কস। নাগরিকপঞ্জির সব তথ্য ফের যাচাইয়ের দাবি ছিল তাদের। এ মামলার পরের শুনানি ২৬ নভেম্বর। ‘এখন ১৬০০ কোটি টাকা খরচের সম্পূর্ণ অডিটও হোক’, দাবি সংগঠনটির সভাপতি অভিজিৎ শর্মার।
নোট বাতিল, জিএসটির পর আসামের নাগরিকপঞ্জি বাতিল ‘বিজেপির তুঘলকি শাসনের আরও এক নজির’ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র অভিজিৎ মজুমদার।
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        