রবিবার, ৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বিশ্ব

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হেফাজতে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর প্রতিবাদে কানাডার পার্লামেন্টের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংহতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ‘নো জাস্টিস নো পিস’ সমাবেশে ট্রুডো অন্যদের মতোই হাঁটু গেড়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান -এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকে ঘিরে জ্বলে ওঠা ক্ষোভের আগুন থেকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বিশ্বের মানুষ। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গতকাল  বিক্ষোভ করেছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।  বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও পিপার স্প্রে ব্যবহার করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, আদালত শুক্রবার ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিল করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। অবশ্য বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজকরা গতকাল নিউ সাউথ ওয়েলসের আপিল আদালত এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে। জরুরি শুনানিতে আদালত আপিলকারীদের পক্ষে রায় দেয়। পুলিশের হিসাবে, ব্রিসবেনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা মাস্ক পরেছিল এবং তাদের হাতে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। অনেকে আদিবাসীদের পতাকা গায়ে পরেছিলেন। তারা অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের প্রতি পুলিশের দুর্ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানান। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ছাড়াও মেলবোর্ন, অ্যাডিলেড ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এসবিএস নিউজ জানিয়েছে, অস্ট্রেলীয় আদিবাসীদের প্রতি বর্ণবাদ ও সহিংসতা অবসানের দাবিতে ৩০ হাজারের বেশি লোক শহরগুলোতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া আরেকটি ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের ওপর পিপার স্প্রে করতে দেখা গেছে পুলিশকে। এছাড়া শুক্রবার বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সতর্কতা উপেক্ষা করে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। নিজ নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। এ দিন সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয়েছে জার্মানিতে। ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং হামবুর্গে বিক্ষোভে জড়ো হয় ১০ হাজারের বেশি মানুষ। হাত তুলে, ব্যানার উড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে তারা। ব্যানারে লেখা ছিল : ‘তোমার যন্ত্রণা, আমারও যন্ত্রণা; তোমার লড়াই, আমারও লড়াই’ স্লোগান। অনেকের মুখেই ছিল মাস্ক। লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভকারীরা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এক হাঁটু গেড়ে বসে প্রতিবাদ জানায়।

শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় বিক্ষোভকারীরা ক্যানবেরার পার্লামেন্ট ভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে সেই বিক্ষোভের দৃশ্য। কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের কারণে এ পদযাত্রা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে অসন্তোষ আছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ কাস্টডিতে আদিবাসী মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লয়েড হত্যা নিয়ে বিক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। অস্ট্রিয়ায় বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে বর্ণবাদবিরোধী স্লোগান লেখা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। ওদিকে, নরওয়েতেও করোনাভাইরাস ঠেকাতে বড় ধরনের জনসমাগমের ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। নরওয়ের পার্লামেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে সামাজিক দূরত্ব বিধি উপেক্ষা করে জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। তবে তাদের মুখে ছিল মাস্ক। এ ছাড়া, নেদারল্যান্ডস, লাইবেরিয়া, ইতালি, কানাডা এবং গ্রিসেও মানুষ বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে। ফ্রান্সের পুলিশ করোনাভাইরাস এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলার যুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিষিদ্ধ করেছে। -বিবিসি

সর্বশেষ খবর