শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

গরুকে ভারতের জাতীয় পশু ঘোষণার পক্ষে আদালত

গরুকে ভারতের জাতীয় পশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাই কোর্ট বুধবার এক রায়ের পর্যবেক্ষণে এই মত দেয় বলে গতকাল হিন্দুস্তান টাইমসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। আদালত বলেছে, গো-রক্ষা হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গরু। সেইমতো কেন্দ্রীয় সরকারের আইন তৈরি করা উচিত। আদালত বলে, বেদ এবং মহাভারতের মতো প্রাচীন লেখায় গরুকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। যা ভারতের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে এবং যে কারণে ভারত পরিচিত।

বিচারপতি যাদবের মতে, গরুকে মৌলিক অধিকার প্রদানের জন্য সংসদে বিল পেশ করা উচিত। যারা গরুর ক্ষতি করছেন, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য কঠোর আইন প্রণয়নেরও আহ্বান করেছে হাই কোর্ট। ১২ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি যাদব বলেছেন, ‘আমরা জানি যে, যখন কোনো দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন সেই দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।’ মামলার প্রসঙ্গে হাই কোর্ট জানিয়েছে, জাভেদ (৫৯) নামের ওই ব্যক্তি গরু চুরি করেছেন, খুন করেছেন, মু-চ্ছেদ করেছেন এবং গো-মাংস রেখেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া মামলায় তার জামিন আবেদন খারিজ করা হয়। অভিযুক্তকে যদি জামিনে মুক্ত করা হয়, তাহলে আবারও একই অপরাধ করবেন।

হাই কোর্ট জানিয়েছে, শুধু হিন্দুরাই যে গরুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন, তা নয়। মুসলিম শাসকরাও নিজেদের আমলে গরুকে ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বাবর, হুমায়ুন এবং আকবর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় গো-হত্যার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিলেন। মহিশুরের শাসক হায়দার আলী গো-হত্যাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছিলেন। বিচারপতি যাদবের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রের উচিত সংসদে বিল এনে গোরক্ষাকে হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা। গরুর ভালো হলে তবেই দেশের ভালো হবে।

ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে নতুন মাত্রা পেয়েছে ‘গো-রাজনীতি’। গো-রক্ষার নামে গণপিটুনি, হানাহানি এমনকি বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর