রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা নিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছে সামরিক জান্তা। তাদের বিরুদ্ধেই রোহিঙ্গাদের গণহত্যার অভিযোগ বিশ্ববাসীর। তারাই রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আপত্তি জানিয়েছে। সেই আপত্তি নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি আইসিজেতে শুনানি হয়। আরও তিন দিন এই শুনানি হবে। প্রথম শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নেন সামরিক জান্তার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী কো কো হ্লাইং, অ্যাটর্নি জেনারেল থিদা ও। এই শুনানিতে ২০২০ সালে অংশ নিয়েছিলেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। এখন তিনি জান্তার হাতে বন্দি। তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিচ্ছে। এদিকে আইসিজে’তে মিয়ানমারের পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী মন্ত্রী কো কো হ্লাইং, তার অ্যাটর্নি জেনারেল থিদা ও’র বিরুদ্ধে এ কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারাই আদালতে এই মামলা ও শুনানির বিরোধিতা ও সমালোচনা করেছে। এদিকে সামরিক জান্তাকে মামলায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করাকে কলঙ্কজনক শুনানি বলে অভিহিত করেছেন মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের সাবেক স্পেশাল র্যাপোর্টিউর ইয়াংহি লি।
অন্যদিকে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা, জাতিগত সংখ্যালঘু প্রতিনিধি এবং অধিকারকর্মীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি)। এই সরকার চেয়েছিল আইসিজে’তে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবে তারা। প্রাথমিক শুনানিতে মিয়ানমার যেসব আপত্তি উত্থাপন করেছে, তা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। কিন্তু এনইউজি’কে সেই অনুমতি দেয়নি আইসিজে। এর অর্থ দাঁড়ায় এই মামলায় প্রতিনিধিত্ব করবে সামরিক জান্তা। আর তারা মামলার শুনানিতে সোমবার দাবি করেছে, এ মামলা করার কোনো আইনগত অধিকার নেই গাম্বিয়ার। কিন্তু সামরিক জান্তাকে মামলায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করাকে কলঙ্কজনক শুনানি বলে অভিহিত করেছেন মিয়ানমারে বিষয়ক জাতিসংঘের সাবেক স্পেশাল র্যাপোর্টিউর ইয়াংহি লি। তিনি বলেন- ‘(সামরিক জান্তার পরিবর্তে) এনইউজি কর্তৃপক্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ছিল আদালতের। (সামরিক জান্তা) যে আপত্তি উত্থাপন করেছে আনুষ্ঠানিকভাবে তা বানচাল করে দেওয়া উচিত ছিল। তাদের উচিত ছিল মামলার প্রকৃত বিষয়বস্তু নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। সেই প্রকৃত বিষয়বস্তু হলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতা।’ এখন সুবিচার পাওয়াই মুশকিল হবে।