রাশিয়ার রেড স্কয়ারে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় দিবস উদ্যাপনে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার রাজধানী লক্ষ্য করে ইউক্রেনের হামলার কয়েকদিন পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে পাশে নিয়ে কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া কয়েক হাজার সেনা এবং ২০ জনের বেশি বিশ্বনেতাকে পুতিন বলেন, রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিক্ষা মনে রেখেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট তার বক্তৃতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে ইউক্রেনে মস্কোর এখনকার সামরিক অভিযানের প্রসঙ্গও টেনেছেন, যে অভিযান এখন চতুর্থ বছর পার করছে। এ বছর মস্কোতে এ বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে প্রথমবারের মতো এক সারি ট্রাককে নানান যুদ্ধ ড্রোন নিয়ে যেতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের জমকালো ৮০ বছর উদ্যাপনে রাশিয়া একতরফাভাবে ইউক্রেনে তিন দিনের যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করেছে। কিয়েভ এই ঘোষণাকে ‘নাটক’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। যুদ্ধবিরতি ডেকে বুধবার মধ্যরাতে কার্যকর হওয়ার পর রাশিয়াই তা হাজারবার ভেঙেছে বলে এরই মধ্যে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন। রাশিয়া বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে অটল থাকলেও ইউক্রেন মানছে না। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা রাশিয়াকে তড়িঘড়ি একটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দিতে হয়েছিল, যে কারণে কয়েক হাজার যাত্রী পড়েন বিপাকে। গতকাল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় উদ্যাপনকালে মস্কোর কেন্দ্রে দেখা গেছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা, ছিল নানান বিধিনিষেধও। -বিবিসি
পুতিনের ভাষণ ও এক মিনিট নীরবতার আগে রুশ স্থলবাহিনীর প্রধান ওলেগ সালিয়াকভ রেড স্কয়ারের কুচকাওয়াজে ১১ হাজার সেনাকে নেতৃত্ব দেন, এই সেনাদের মধ্যে ইউক্রেনে লড়াই করা দেড় হাজার সেনাও ছিল। পুতিন পরে তার ভাষণে বলেন, ‘রাশিয়া নাৎসিবাদ, রুশোফোবিয়া, ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে এক অবিনশ্বর বাধা ছিল, থাকবে।’ তিনি কিয়েভের শাসকদের ‘নাৎসি’ আখ্যা দেন। পুরো দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পক্ষে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সত্য ও ন্যায়বিচার আমাদের পক্ষে।’ এদিনের কুচকাওয়াজে শতাধিক চীনা সেনাও অংশ নিয়েছেন। তাদের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পোশাকে ছিল কমলা-কালো সেইন্ট জর্জ রিবন (ফিতা), রাশিয়া যাকে তাদের সামরিক শক্তিমত্তার প্রতীক মনে করে। এই রিবন রাশিয়ার প্রতিবেশী অনেক দেশেই এখন নিষিদ্ধ। ‘সম্মিলিত পশ্চিমের’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ মস্কো ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক এখন ইতিহাসের যে কোনো সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে, বলেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।-বিবিসি