তিব্বতের নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা গতকাল নিশ্চিত করেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর একজন উত্তরসূরি থাকবেন। তিনি বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের আশ্বস্ত করেছেন, ৬০০ বছরের পুরোনো দালাই লামার প্রতিষ্ঠান অব্যাহত থাকবে।
এটি তিব্বতিদের জন্য একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। যাদের অনেকেই নেতা ছাড়া ভবিষ্যতের আশঙ্কা করেছিলেন। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী সমর্থকদের জন্য যারা দালাই লামাকে অহিংসা, করুণা এবং চীনা শাসনের অধীনে তিব্বতি সাংস্কৃতিক পরিচয়ের জন্য স্থায়ী সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে দেখেন।
তিব্বতিদের মতে, তেনজিন গায়াতসো হলেন দালাই লামার ১৪তম পুনর্জন্ম।
১৯৫৯ সালে তিব্বতের রাজধানী লাসায় চীনা সেনারা একটি বিদ্রোহ দমন করার পর থেকে দালাই লামা এবং হাজার হাজার তিব্বতি ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বৌদ্ধ ধর্মগুরু পূর্বে বলেছিলেন, জনসাধারণের চাহিদা থাকলেই দালাই লামার প্রতিষ্ঠান অব্যাহত থাকবে। গতকাল তিনি বলেন, ১৪ বছর ধরে তিনি নির্বাসিত তিব্বতি প্রবাসী, হিমালয় অঞ্চল, মঙ্গোলিয়া এবং রাশিয়া ও চীনের কিছু অংশের বৌদ্ধদের কাছ থেকে একাধিক আবেদন পেয়েছেন, দালাই লামার প্রতিষ্ঠান অব্যাহত রাখার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছেন। তিনি ভারতীয় হিমালয় শহরে ধর্মীয় নেতাদের একটি সভার শুরুতে সম্প্রচারিত ভিডিওতে বলেন, বিশেষ করে তিব্বতের তিব্বতিদের কাছ থেকে আমি বিভিন্ন মাধ্যমে একই আবেদন জানিয়ে বার্তা পেয়েছি। এ সমস্ত অনুরোধ অনুসারে আমি নিশ্চিত করছি যে, দালাই লামার প্রতিষ্ঠান অব্যাহত থাকবে। তার বার্ধক্য তিব্বতি নেতৃত্বের ভবিষ্যত এবং তার উত্তরাধিকারের সূক্ষ্ম প্রশ্ন নিয়েও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ৬ জুলাই দালাই লামা ৯০তম জন্মদিনের আগে এ ঘোষণা করেন। চীন তাকে একজন বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে নিন্দা করলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দালাইলামা নিজেকে একজন সরল বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হিসেবে দাবি করেন। অনেক নির্বাসিত তিব্বতি আশঙ্কা করছেন, চীন ১৯৫০ সালে যে অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেছিল, সেখানে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য তাদের নিজস্ব উত্তরসূরির নাম ঘোষণা করবে। কিন্তু দালাই লামা গতকাল বলেছেন, ১৫তম দালাইলামাকে চিহ্নিত করার দায়িত্ব একচেটিয়াভাবে ভারতভিত্তিক গাদেন ফোদ্রাং ট্রাস্টের ওপর বর্তাবে, যা দালাই লামার কার্যালয়। তিনি বলেন, আমি পুনর্বার বলছি যে, গাদেন ফোদ্রাং ট্রাস্টের ভবিষ্যতের পুনর্জন্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার একমাত্র কর্তৃত্ব রয়েছে; এ বিষয়ে অন্য কারও হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই। এএফপি