গত কয়েকদিনের মতো আজও রাজধানী ঢাকার বাতাস সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ঢাকার বাতাসে দূষণ সাধারণত কমই থাকে।
বৃহস্পতিবার বায়ুদূষণ ও বাতাসের গুণমান সূচক নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের সকাল ৮টা ১৫মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান ৮১, যা সহনীয় পর্যায়ের বাতাসের নির্দেশক।
বুধবারও একই সময়ের রেকর্ডে ৮১-ই ছিল ঢাকার বায়ুমান। তবে বায়ুদূষণের তালিকায় বুধবারের তুলনায় একধাপ পিছিয়েছে ঢাকা। বুধবার ওই তালিকায় রজধানীর অবস্থান ছিল ২১। আজ এক ধাপ পিছিয়ে তা হয়েছে ২২তম।
বুধবারের মতো আজও অস্বাস্থ্যকর বাতাস নিয়ে বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে আছে কঙ্গোর কিনশাসা। আজ শহরটির ১৬৯। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো, চিলির সান্তিয়োগো, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ১৬৯, ১৫৯, ১৫৮ ও ১৫৮।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে দূষণের প্রধান উৎস অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বাতাসকে বিশুদ্ধ হিসেবে ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর মারা যায় বহু মানুষ। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে মারা যায় ৬৭ লাখ মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/কেএ