শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

তিন দশকে ডুবে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল

তিন দশকে ডুবে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা গলা ফাটিয়ে চলছেন। তাদের বক্তব্য, এই অবস্থা চলতে থাকলে সমুদ্রের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। কারণ বরফ ও হিমবাহ গলবে। সেই সঙ্গে বাড়ছে জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি। আর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব হলো বিশ্বের অনেক দেশ ও শহর তলিবে যাবে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা গড়ে ১০ মিলিমিটার বেড়েছে। পাশাপাশি একটি নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

তবে এবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা জানাল আরও নতুন তথ্য। তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট ভয়ানক। কারণ নাসার সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় মূলত আমেরিকার কথা বলা হয়েছে। যদিও তার প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বের ওপর। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০৫০-এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব উপকূলবর্তী এলাকাই সমুদ্রের নিচে চলে যাবে। এমনকি কোন উপকূল কতটা ডুববে তাও বলা হয়েছে সমীক্ষায়। আর এর প্রভাব পড়বে বেশ কিছু দেশের ওপর। তিন দশকের স্যাটালাইট ডেটা বিশ্লেষণ করে করা হয়েছে সমীক্ষা। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছে, আমেরিকার উপকূল এক ফুট পর্যন্ত ডুবে যেতে পারে। অর্থাৎ পানির স্তর বর্তমানে যেখানে আছে, তার চেয়েও এক ফুট বাড়তে পারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপসাগরীয় উপকূল এবং দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল। অর্থাৎ নিউইয়র্ক, সানফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ভার্জিনিয়ার মতো উপকূলীয় অনেক রাজ্য সমস্যায় পড়বে।

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে ঝড়ের কারণে সমুদ্রিক বন্যা। এই গবেষণাটি সম্প্রতি কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। নাসার এই গবেষণায় অনেক বৈজ্ঞানিক সংস্থার স্টাডি রিপোর্টও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যাকে বলা হয় সি-লেভেল রাইজ টেকনিক্যাল রিপোর্ট। এতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ বছরে আমেরিকার উপকূলে শুধুই পানি থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ থেকে ১৪ ইঞ্চি বৃদ্ধি পাবে। উপসাগরীয় উপকূলে তা বৃদ্ধি পাবে ১৪ থেকে ১৮ ইঞ্চি। পশ্চিম উপকূলে ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি বাড়বে। এই গবেষণা করতে জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীদেরও সাহায্য নেওয়া হয়। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী ডেভিড হল্যান্ড বলেছেন, নাসার তথ্য সঠিক। ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় আরও দুর্যোগ ডেকে আনবে। অর্থাৎ বিপদ ক্রমাগত বাড়ছে।

সাড়ে ১৮ বছর পর চাঁদের কক্ষপথের পরিবর্তন, এল-নিনো এবং লা-নিনার প্রভাব এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আমেরিকার অনেক উপকূলীয় রাজ্য সামুদ্রিক বন্যার সম্মুখীন হতে চলেছে। অর্থাৎ আগামী সাড়ে ১৮ বছরে সমুদ্রসৈকতের অবস্থা আরও খারাপ হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে। সমুদ্র এগিয়ে আসবে। এল-নিনোর কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠ উষ্ণ হয়। যার কারণে ঝড়ের পরিমাণ বাড়বে।

নাসার সি-লেভেল চেঞ্জ টিমের প্রধান বেন হ্যামলিংটন বলেন, ‘এটাকে আমরা বড় কোনো চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম মনে করছি না। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। গবেষণাটা শুধু আমেরিকার, কিন্তু এর প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বে।’

সর্বশেষ খবর