যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে গিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণও দিয়েছেন তিনি। এ সময় তুলে ধরেছেন যুদ্ধের বিভিন্ন দিক। যুদ্ধে টিকে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অব্যাহত আর্থিক সহায়তাও চেয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, আপনাদের অর্থ কোনো সাহায্য নয়। এটা হচ্ছে বৈশ্বিক গণতন্ত্র ও নিরাপত্তায় বিনিয়োগ।
ভাষণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরালো করতে কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান জেলেনস্কি। তিনি রাশিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে বলেন দেশটিকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, ইউক্রেনের শহরগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়া সব কিছু ব্যবহার করছে। কিন্তু ইউক্রেন তার অবস্থান ধরে রাখবে ও আত্মসমর্পণ করবে না।
তিনি আরও বলেন, নৃশংস যুদ্ধ চলা সত্ত্বেও ইউক্রেনবাসী এ বছর বড়দিন উদযাপন করবে। বিদ্যুৎ না থাকলেও নিজেদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের আলো নিভে যাবে না। ইউক্রেন নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে এই বলে জেলেনস্কি তার বক্তব্য শেষ করেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জেলেনস্কি কোনো বিদেশ সফরে গেলেন। আর এ সফর ছিল বড়দিনের আগে। বুধবারই হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক চলে জেলেনস্কির। বৈঠকে বাইডেন বলেন, ইউক্রেনের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য ইতোমধ্যেই ১৮৫ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য ঠিক করে রেখেছেন।
এই আবহে মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন কখনো রাশিয়ার কাছে মাথা নত করবে না। মস্কোর কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।’
যুদ্ধের ৩০০ দিন পার হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের গতি প্রকৃতি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তবে রাশিয়া প্রায় প্রতিদিনই ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে ইউক্রেনের বড় বড় অবকাঠামো বিশেষ করে বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ধ্বংস করছে।
এদিকে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইট করে জানান, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করে আমি অভিভূত। যুদ্ধ চলাকালীনও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল বহুবার। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আলাপচারিতা সত্যিই ফলদায়ী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর তা জেলেনস্কিকে আমরা জানিয়েছি।’
তবে বড়দিনের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের মার্কিন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে সফরে জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একটি সামরিক পদক উপহার দেন। জেলেনস্কি বলেন, এটি ‘ক্রস অব মিলিটারি মেরিট’ পদকটি ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক ক্যাপ্টেনকে দেওয়া হয়েছিল। তিনি তাঁর পদকটি বাইডেনকে দিয়েছেন। পদকটি গ্রহণ করেছেন বাইডেন। বলেছেন, ইউক্রেনীয় ক্যাপ্টেনকে তিনি একটি সামরিক স্মারক উপহার দেবেন।