সুদানের রাজধানী খার্তুমে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়েছে এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর দুই দলের মধ্যে লড়াই তীব্রতর হয়েছে। খার্তুমে সেনাবাহিনীর সদর দফতরের চারদিকে লড়াই চলছে। সরকারি বাহিনী বলছে, তারা চারদিক থেকে রাজধানীর ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং বিমান হামলা ও ভারী কামানের গোলাবর্ষণ করে তাদের প্রতিপক্ষ আধাসামরিক বাহিনীকে শহর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অপরদিকে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের দখলে অনেক এলাকা রয়েছে। তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে শুরু হওয়া লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ৫০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। তবে মনে করা হচ্ছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
এদিকে লড়াইয়ের তিন সপ্তাহ পার হওয়ার পর গতকাল সংঘাত বন্ধের সম্ভাবনা নিয়ে খানিকটা আশার বাণী শুনিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ভলকার পার্থেজ। তার ভাষ্যমতে, এখন পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অটুট থাকা দুই পক্ষই আলোচনার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। অন্যদিকে সবশেষ যে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছিল তা গতকাল শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগের দিন শনিবার রাত থেকেই খার্তুম শহরে তীব্র লড়াই শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টায় যুদ্ধবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য বাড়ানোর ঐকমত্য হয়েছিল কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
কেন এই লড়াই : সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে। কিন্তু পরে বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে তৈরি হয় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। মূলত কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই এই বিরোধ। এরা হলেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। জেনারেল আল-বুরহান সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং সে কারণে তিনিই দেশটির প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে দেশটির উপ-নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফের কমান্ডার। আগামীতে দেশটি কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েই এ দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।