শিরোনাম
রবিবার, ৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাখমুতে ফসফরাস বোমা হামলার অভিযোগ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাখমুতে ফসফরাস বোমা হামলার অভিযোগ

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামছেই না। এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ বাখমুত শহরে ফসফরাস বোমা হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, বাখমুতে আগুন জ্বলছে। এর ফলে শহরের ওপর সাদা ফসফরাস বৃষ্টির মতোও দেখা যায়। গতকাল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা ফসফরাস বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়। তবে বেসামরিক এলাকায় এ বোমার ব্যবহারকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফসফরাস বোমাবর্ষণের ফলে দ্রুতগতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যা নিভিয়ে ফেলা অত্যন্ত কঠিন। এর আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল।

বাখমুতের কৌশলগত মূল্য নিয়ে প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও গত কয়েক মাস ধরে শহরটি দখলে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া। বাখমুতে লড়াইয়ে মস্কোর হাজার হাজার সেনা মারা গেছেন বলে পশ্চিমের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, অগ্নিসংযোগকারী গোলাবারুদের পাশাপাশি ফসফরাস হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বাখমুতের অদখলকৃত এলাকা। কিয়েভের বিশেষ বাহিনীর কমান্ড বলেছে, মস্কোর বাহিনী ‘শহর ধ্বংস’ অব্যাহত রেখেছে। তবে বাখমুতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ঠিক কখন ফসফরাস হামলা চালিয়েছে তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু ইউক্রেনের শেয়ার করা ফুটেজে বাখমুতের সুউচ্চ ভবনগুলোতে আগুনে জ্বলতে দেখা গেছে। আর এ ভিডিও ফুটেজ ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী নজরদারি ড্রোন থেকে ধারণ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা অন্যান্য ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে আগুন জ্বলছে এবং ফসফরাসের সাদা মেঘ রাতের আকাশকে আলোকিত করছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা ভিডিওটি বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি। ফুটেজটি বাখমুত শহরের কেন্দ্রস্থলের ঠিক পশ্চিমে এবং একটি শিশু হাসপাতালের কাছাকাছি এলাকায় ধারণ করা। বিশ্লেষণে বাখমুত হামলায় অগ্নিসংযোগকারী গোলাবারুদের ব্যবহার করা হয়েছিল বলে নিশ্চিত হয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যম। তবে সেখানে ফসফরাস বোমা ব্যবহারের অভিযোগ স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

গত বছর ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকবার সাদা ফসফরাস ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে কিয়েভ। এমনকি যুদ্ধের একেবারে শুরুর দিকে মারিউপোল অবরোধের সময় রাশিয়া প্রথম এই বোমা ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেছিল ইউক্রেন। মস্কো কখনই প্রকাশ্যে সাদা ফসফরাস ব্যবহারের অভিযোগ স্বীকার করেনি। গত বছর ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ জোর দিয়ে বলেছিলেন, রাশিয়া কখনই আন্তর্জাতিক কনভেনশন লঙ্ঘন করেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও বলেছিলেন, রাশিয়া ফসফরাস বোমার ব্যবহার করছে। ফসফরাস বোমার মাধ্যমে এক ধরনের রাসায়নিক পাউডার ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা অক্সিজেনের সংস্পর্শে জ্বলে ওঠে এবং ভয়াবহভাবে পুড়িয়ে দেয়।

এবার রুশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি : রুশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি করেছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের থেকে পাওয়া প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে কিয়েভের আকাশ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। এই প্রথম রাশিয়ার কোনো অত্যাধুনিক অস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম হলো দেশটি। আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রটির পরিসর ২ হাজার কিলোমিটার। তাছাড়া শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে উড়তে পারে। ফলে এটি ভূপাতিত করা খুবই কঠিন। হাইপারসনিক গতি ও ভারি ওয়ারহেডের সংমিশ্রণ কিনজলকে ভূগর্ভস্থ বাংকার বা পর্বত সুড়ঙ্গের মতো সুরক্ষিত লক্ষ্যগুলোকেও ধ্বংস করতে সক্ষম। গতকাল এক টেলিগ্রাম পোস্টে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর কমান্ডার মাইকোলা ওলেশচুক বলেছেন, ঐতিহাসিক ঘটনার জন্য আমি ইউক্রেনের জনগণকে অভিনন্দন জানাই। কারণ আমরা কিনজলকে ভূপাতিত করেছি। অন্যদিকে অবরুদ্ধ বাখমুতে রাশিয়ার বিরদ্ধে ফসফরাস বোমা ব্যবহারে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দ্বারা প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে বাখমুতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়, যা দেখতে সাদা ফসফরাস বৃষ্টির মতো। ফসফরাস বোমা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুন তৈরিতে সাহায্য করে, যা নেভানো কঠিন। এর আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। বিবিসি।

সর্বশেষ খবর