বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে পৃথিবীর সব বরফ গলে গেলে কী পরিণতি হতে পারে, সেই ছবি দেখিয়েছিল হলিউড সিনেমা ‘ওয়াটারওয়ার্ল্ড’। এবারে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাস্তবের পৃথিবী এগোচ্ছে কল্পবিজ্ঞানের ওই ছবির পথেই। পৃথিবী গড় তাপমাত্রা গত তিন দশক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রতি ঘণ্টায় গ্রিনল্যান্ডে ৩০ মিলিয়ন টন করে বরফ গলছে।
সেই মোতাবেক ৫০০ বছর পর দেখা যাবে উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুতে আর একটুও বরফের অস্তিত্ব নেই। সব বরফ গলে যাওয়ায় ভবিষ্যতের ওই পৃথিবীতে সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে ৭৬০০ মিটারের কাছাকাছি!
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১৯৯৩ থেকে ২০২৪ তিন দশকে সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা বেড়েছে অন্তত ১০ সেন্টিমিটার। কয়েক মাসে একাধিক আন্তর্জাতিক সেমিনারে পৃথিবীর নামকরা পরিবেশবিদ ও জলবায়ুবিজ্ঞানীরা এমনই কিছু কথাবার্তা শুনিয়েছেন, যাতে ‘শেষের সেই দিনের’ আশঙ্কাই যেন প্রবল হচ্ছে!
১৮৫০ সালের পর থেকে জলবায়ু বিজ্ঞানীরা তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু করেন। আর সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা-সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ১৮৮০ থেকে।
ডেটা সংগ্রহের একেবারে শুরুর পর্যায় থেকেই বিজ্ঞানীদের নজরে এসেছিল দুটি বিষয় প্রথমত, পৃথিবীজুড়ে গড় তাপমাত্রা সময়ের সঙ্গে বেড়ে চলেছে।
বিষয়টা চিন্তা হলেও এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নতুন একটি আঙ্গিক দেখিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক এবং সমুদ্রবিজ্ঞানী সুগত হাজরা। তিনি বলছেন, ‘অতীতে সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়ার ঘটনা অনেক ঘটেছে। প্রকৃতি এগুলো সামলে নিতে পারবে। তবে, যে বিষয়টা সত্যিই বিপজ্জনক সেটা হলো সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি। আমরা দেখছি এখন সমুদ্রের জল ৭০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত গরম থাকছে। এ প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এখান থেকে কোনো ‘ওয়ে আউট’ আছে কি না সেটাই ভাবার।’