ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মধ্যরাত থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৪ জনের প্রাণ গেছে। হামাস-শাসিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাতে এমনটি জানিয়েছে বিবিসি। বেশির ভাগ নিহত হয়েছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে। বেইত লাহিয়া ও দেইর আল-বালাহ থেকেও নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় এক পরিবারের সবাই নিহত হয়েছেন বলে হামাস-শাসিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে। সংস্থাটির বরাতে জানানো হয়েছে, ওই হামলায় একই পরিবারের বাবা, মা ও সন্তানরা প্রাণ হারিয়েছেন। গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলি অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। গত ১০ সপ্তাহে কোনো ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হয়নি অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে। এমন সময়ে এ বিমান হামলা ঘটল। এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানান, ক্ষুধায় তিনি ভালোভাবে নড়াচড়া করতে পারছেন না। গাজায় কাজ করা ১০টি ভিন্ন ত্রাণ সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।- বিবিসি
ওই হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জনের মতো লোকের প্রাণ যায়। জিম্মি হন ২৫১ জন। পরে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালানো শুরু করে। সেই থেকে উপত্যকাটিতে অন্তত ৫২ হাজার ৮২৯ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন ১ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।
৭৭ বছর আগের ‘নাকবা’র যন্ত্রণা কাটেনি ফিলিস্তিনিদের
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় নিজেদের ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা স্মরণে ‘নাকবা দিবস’ পালন করেন ফিলিস্তিনিরা। প্রতি বছর ১৫ মে দিবসটি পালিত হয়। এ বছর ‘নাকবা’র ৭৭তম বার্ষিকী। ইসরায়েল ১৯৪৮ সালে নিজেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর আনুমানিক সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ভূমি থেকে পালিয়ে কিংবা জোরপূর্বক উৎখাত হতে বাধ্য হয়েছিলেন। ফিলিস্তিনিদের ওপর এখনো আগ্রাসন চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। সেখানে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েল সরকারে থাকা নেতারা গাজা ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেই যাচ্ছেন। অন্যদিকে ১৯৬৭ সাল থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও বিভিন্ন সময়ে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানকার শরণার্থী শিবির থেকে হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাকবা স্মরণে বুধবার পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরের বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে ফিলিস্তিনি পতাকা ও ‘প্রত্যাবর্তন’ লেখা কালো পতাকা উড়তে দেখা যায়। শহরের কেন্দ্রস্থলে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে স্কুলশিক্ষার্থীদের বাসে করে আনা হয়। সপ্তাহব্যাপী চলবে কর্মসূচি।