ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত ও ডজনের বেশি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। সোমবার রাত থেকে শুরু করে গতকাল ভোর পর্যন্ত কিয়েভে এ হামলা হয়, যাকে সাড়ে তিন বছর আগে ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের রাজধানীতে সবচেয়ে বড় বোমাবর্ষণ বলা হচ্ছে। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লাইমেঙ্কো বলছেন, সব মিলিয়ে রাশিয়া এ সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে ৪৪০টি ড্রোন ও ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এদিকে রাতভর রাশিয়াও ইউক্রেনের ছোড়া ১৪৭টি ড্রোন প্রতিহত ও ধ্বংস করেছে বলে মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।
বিবিসি লিখেছে, কিয়েভে এদিনের রুশ হামলা চলেছে টানা ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে, শহরটির আতঙ্কিত বাসিন্দারা মধ্যরাতের আগেই ভূগর্ভস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যান। তাদের সেখানে থাকতে হয় সূর্য উঠে যাওয়ার পরও। রাশিয়ার হামলায় শহরটির ২৭টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে একটি জেলার ৯ তলা একটি ভবনে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, বলেছেন কর্মকর্তারা। ‘চরম দুঃস্বপ্নে জেগে ওঠা। পুরো ভবন ধসে পড়েছে, মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে,’ এক্সে এমনটাই লিখেছেন ইউক্রেনের এমপি লেসিয়া ভাসিলেঙ্কো। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মানুষজনকে বের করতে উদ্ধারকারী দলগুলো কাজ করছে বলে ক্লাইমেঙ্কো জানিয়েছেন। রাতভর কিয়েভে শোনা গেছে বড় বড় সব বিস্ফোরণ আর ড্রোন ভূপাতিত করতে সহজে বহনযোগ্য ইউক্রেনের আকাশ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের মেশিনগানের গুলির মুহুর্মুহু শব্দ। সকালে একের পর এক সাইরেন উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, শব্দ শুনে জরুরি বিভাগের কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মানুষজনকে টেনে তোলার কাজ থামিয়ে দিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটেছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে আকাশপথে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। বিবিসি
তারা এখন বড় বড় ড্রোন ও বিভ্রান্তিকর লক্ষ্যবস্তু (ডিকয়) একসঙ্গে পাঠাচ্ছে, যাতে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করা যায়, এটাই তাদের নতুন কৌশল। কিয়েভও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে গত কয়েক মাসে দুই দফা সরাসরি আলোচনা হলেও যুদ্ধবন্দি ও মৃত সেনা বিনিময় ছাড়া যুদ্ধ থামাতে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।