স্কুলে স্মার্টফোন ও স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। আইন আকারে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। গতকাল দেশটির জাতীয় পরিষদে এ-সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়। ১৬৩ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১১৫ জন বিলটির পক্ষে ভোট দেন। আইনটি কার্যকর হবে ২০২৬ সালের মার্চ থেকে। গতকাল এ খবর দিয়েছে টিআরটি গ্লোবাল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্মার্টফোন আসক্তি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ব্যবহার শিক্ষার মান, মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর আগে ফ্রান্স ও ফিনল্যান্ড আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, মূলত কম বয়সী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে। ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও চীন তুলনামূলকভাবে কঠোর বিধিনিষেধ চালু করেছে। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যে স্কুলের সবস্তরে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ।
নেদারল্যান্ডসে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্কুলে ফোন নিষিদ্ধের পর শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বেড়েছে।
শিক্ষকদের হাতে ক্ষমতা : দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন আইন অনুযায়ী, শিক্ষকরা শুধু ক্লাসে নয়, স্কুল প্রাঙ্গণের যেকোনো জায়গায় ফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় সহায়ক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন। জরুরি অবস্থা ও শিক্ষামূলক কাজেও ছাড় দেওয়া হবে।
‘গবেষণা ও চিকিৎসা প্রমাণ দেখাচ্ছে, স্মার্টফোন আসক্তি শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও মানসিক বৃদ্ধিতে মারাত্মক ক্ষতি করছে,’ বলেছেন বিলটি প্রস্তাব করা বিরোধী দলের সংসদ সদস্য চো জুং-হুন। তিনি আরও জানান, বিশ্বজুড়ে এরকম উদাহরণ বাড়ছে বলেই দক্ষিণ কোরিয়ার জন্যও এটি জরুরি ছিল।
সরকারি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সি প্রায় ৪৩ শতাংশ কিশোর-কিশোরী স্মার্টফোন নির্ভরশীল, যা জাতীয় গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। দেশটি বিশ্বের অন্যতম ডিজিটালি সংযুক্ত দেশ; পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, ২০২২-২০২৩ সালে ৯৯ শতাংশ দক্ষিণ কোরিয়ান অনলাইনে এবং ৯৮ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী। কিশোরদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি জানিয়েছে, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।