ইসলাম সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান ও অধিকারের প্রতি সম্মান জানায়। সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় ইসলামে কার্যত বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। 'রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে মুসলিম কর্তৃক নিরাপত্তাপ্রাপ্ত কোনো অমুসলিমকে হত্যা করবে, সে বেহেশতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ বেহেশতের ঘ্রাণ পাওয়া যায় চলি্লশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে।' (বুখারি)
মহান আল্লাহ অন্য ধর্মের উপাস্যদের গালি দিয়ে সে ধর্মের অনুযারীদের মনে কষ্ট না দেওয়ার জন্য মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ করা হয়েছে, 'আল্লাহতায়ালার বদলে তারা যাদের ডাকে, তোমরা তাদের কখনো গালি দিও না, নইলে তারাও শত্রুতার কারণে না জেনে আল্লাহতায়ালাকেও গালি দেবে, আমি প্রত্যেক জাতির কাছেই তাদের কার্যকলাপ সুশোভনীয় করে রেখেছি। অতঃপর সবাইকে একদিন তার মালিকের কাছে ফিরে যেতে হবে, তারপর তিনি বলে দেবেন, তারা দুনিয়ার জীবনে কে কী কাজ করে এসেছে।' সূরা আল আনআম : ১০৮ নম্বর আয়াত
ইসলাম শান্তির ধর্ম। অশান্তির পথ বর্জন করা রসুলের সুন্নাহ। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা করা, অগি্নসংযোগ করা, তাদের নারী-শিশুদের বিপন্ন করা মুসলমানদের জন্য চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে মুমিনদের প্রতি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা- 'তোমরা কোনো নারীকে হত্যা করবে না, অসহায় কোনো শিশুকেও না, আর না অক্ষম বৃদ্ধকে। আর কোনো গাছ উপড়াবে না, কোনো খেজুর গাছ জ্বালিয়ে দেবে না, আর কোনো গৃহও ধ্বংস করবে না।' (মুসলিম)
মুসলমানরা পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের নির্দেশ মানতে বাধ্য। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুসরণ করলে কারও পক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ওপর অন্যায়ভাবে চড়াও হওয়া সম্ভব নয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন সেখানে সব ধর্মের সমানাধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল। মুসলমানরা তাই ধর্মীয় কারণেই সংখ্যালঘুদের জানমালের হেফাজত ও মানবাধিকার রক্ষা করতে বাধ্য। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দেশের সব নাগরিকের জানমালের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের তৌফিক দান করুন।
লেখক : ইসলামী গবেষক।