১৬ মার্চ, ২০২৩ ০৭:৫১

মাহে রমজানের প্রস্তুতি

মো. আবু তালহা তারীফ

মাহে রমজানের প্রস্তুতি

পবিত্র মাহে রমজান অত্যাসন্ন। এ মাসকে আমরা আনন্দের সঙ্গে আহলান সাহলান বলে বরণ করে নেব। এ মাসে বিশ্ব মুসলিম আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য রাতে তারাবি নামাজ, শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে বরকতময় সাহরি খাবে। সারা দিন সিয়াম পালন করে সন্ধ্যায় আনন্দের সঙ্গে মিলেমিশে ইফতার করবে। বরকতপূর্ণ এ মাসে মহান আল্লাহ জান্নাতের দরজা খুলে দেন ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন এবং আমাদের সবার শত্রু শয়তানকে শিকলে বেঁধে রাখা হয় এ মাসে। রসুল (সা.) বলেন, ‘যখন রমজান মাস আসে তখন আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শিকলে বাঁধা হয়। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।’ (বুখারি)

মাহে রমজান আল্লাহর নিয়ামত নিয়ে যখন আগমন করত তখন রসুল (সা.) মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রসুল (সা.) রজব মাসের চাঁদ দেখেই মাহে রমজানের আগমনের আশায় থাকতেন। শাবান মাসকে রমজানের প্রস্তুতি ও সোপান মনে করে বিশেষ দোয়া করতেন ও অন্যদের তা শিক্ষা দিতেন। মহানবী (সা.) মাহে রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্য আবেগভরে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসের বিশেষ বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ (মুসনাদে আহমদ)

মাহে রমজানে যেহেতু কোরআন নাজিল হয়েছে তাই আল কোরআন তেলাওয়াত বুঝে করতে হবে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) রোজার মাসে দিনে এক খতম, রাতে তাহাজ্জুদে এক খতম এবং তারাবিতে তিন খতম মোট ৬৩ বার কোরআন খতম দিতেন। যেহেতু রমজানের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো কোরআন, তাই যদি কেউ কোরআন পড়তে না পারে তাহলে পাশের মসজিদে কিংবা মাদরাসায় গিয়ে আলেমদের কাছে কোরআন পড়া শিখে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। আমাদের সমাজের অবহেলিত অসহায় মানুষের সাহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করার জন্য সবাই মিলে উদ্যোগ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মাহে রমজান এলে যেসব কাজ ইবাদতের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সেসব কাজকর্ম রমজান আগমনের আগেই সমাপ্ত করে নিজকে মুক্ত রাখতে হবে। শিল্পকারখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উচিত রমজানে ভারী কোনো কাজ না করিয়ে রোজাদার শ্রমিক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করা। রসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি দয়া কর, তাহলে আসমানবাসী আল্লাহও তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ (আবু দাউদ)

আজ শাবান মাসের চাঁদের কদিন চলে গেল, রমজান আগমনের আর কদিন বাকি আছে তা গুনে রাখতে হবে। রসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা শাবান মাসের চাঁদ ঠিকমতো গুনে রাখো।’ (তিরমিজি) হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসুল (সা.) শাবান মাসের শেষ তারিখের এক বক্তৃতায় আমাদের বললেন, ‘হে লোকসকল! তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করেছে একটি মহান মাস যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর